Meghalaya Honeymoon Murder: হত্যাকাণ্ডের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই একের পর এক ভয়ংকর সব তথ্যপ্রমাণ তদন্তকারীদের হাতে আসছে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মেঘালয়ে হাড়হিম হানিমুন হত্যাকাণ্ড। প্রেমিক রাজের সঙ্গে ছক কষে হানিমুনে গিয়ে স্বামী রাজাকে নৃশংস খুন নববধূ সোনমের। মেঘালয়ে ইন্দোরের দম্পতির হানিমুন হত্যাকাণ্ডে স্তম্ভিত সারা দেশ। প্রথমে দম্পতির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় মেঘালয় পুলিস ধন্দে পড়ে গেলেও, ধীরে ধীরে পুলিসের হাতে আসতে থাকে একের পর এক সূত্র। যে সূত্রের মধ্যে যেখানে সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয় 'মঙ্গলসূত্র' ও বিয়ের আংটি!
যেখান থেকেই তদন্তকারীদের সন্দেহের তির সোনমের দিকে ঘুরে যায়। এরপর ধীরে ধীরে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই একের পর এক ভয়ংকর সব তথ্যপ্রমাণ তদন্তকারীদের হাতে আসছে। রাজা খুনে সোনমের বিরুদ্ধে এরকম প্রায় ১৫ তথ্যপ্রমাণ হাতে এসেছে তদন্তকারীদের।
ইন্দোরের দম্পতির হোমস্টে-র ঘরে তল্লাশি চালানোর সময় মেঘালয় পুলিস স্যুটকেসে সোনমের মঙ্গলসূত্র ও বিয়ের আংটি খুঁজে পায়। যা সোনম খুলে রেখে গিয়েছিলেন। নববিবাহিতা একজন কেন মঙ্গলসূত্র ও আংটি খুলে রেখে যাবেন? তাও আবার হানিমুনে এসে? যে মঙ্গলসূত্র কিনা একজন নববধূর বিয়ের চিহ্ন বহন করে! সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের।
এরপর মেলে 'ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টস', খুকরি, রক্তাক্ত পোশাক, সিসিটিভি ফুটেজ। অভিযুক্তদের একজন আকাশের রক্তমাখা শার্টে রাজা রঘুবংশীর রক্ত মিশে থাকার বিষয়টি ফরেনসিক পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়েছে। গ্রেফতারের সময় আরেক অভিযুক্ত আনন্দের পরনেও ছিল রক্তমাখা পোশাক। সোনমের রেইনকোটেও মিলেছে রক্তের দাগ। তার ফরেন্সিক পরীক্ষা চলছে।
উদ্ধার হয় খুনে ব্যবহৃত ম্যাচেতে বা খুকরির মতো ভয়ংকর ধারালো অস্ত্র। খুনের অস্ত্র এবং রাজার জিনিসপত্র সহ বিভিন্ন স্থানে অভিযুক্তের আঙুলের ছাপ মেলে। সেইসঙ্গে খুনে ব্যবহৃত খুকরি যে দোকান থেকে কেনা হয়েছিল, সেই দোকানদারের সাক্ষ্য মেলে।
তদন্তকারীদের হাতে আসে একাধিক ইলেকট্রনিক তথ্যপ্রমাণ। যারমধ্যে রয়েছে অভিযুক্তদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সহ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস।
হোটেল মালিকদের বিবৃতি অভিযুক্তদের হোটেল বুকিং নিশ্চিত করে। বুকিং করার জন্য অভিযুক্তরা লজে তাদের আধার কার্ড এবং অন্যান্য পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিয়েছিল। সেখান থেকেই তদন্তকারীরা তাদের আসল পরিচয় জানতে পারেন।
শিলংয়ের স্কুটার বিক্রেতার কাছ থেকে পাওয়া যায় ইন্দোরের দম্পতির সই করা ভাড়ার রেকর্ড। সেইসঙ্গে ট্রেন এবং বিমানের টিকিট, যা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সমস্ত সন্দেহভাজদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার সময়সূচি (Travel Timeline)-কে চূড়ান্ত করে।
সোনমের একটি ফোন এখনও মিসিং হলেও, তদন্তকারীদের হাতে আসে প্রেমিক রাজ ও ৩ সুপারি কিলারের সঙ্গে সোনমের কল রেকর্ড। যা থেকে কোথায় কীভাবে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হচ্ছিল, তা জানা যায়।
সেইসঙ্গে মোবাইল ফোনের লোকেশন ডেটা পরীক্ষায় ২৩ মে খুনের স্থলের কাছাকাছি সব অভিযুক্তের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। এছাড়া আরও অসংখ্য ডিজিটাল ক্লু তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। যারমধ্যে কিছু বিশ্লেষণের জন্য কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
পুলিস জানাচ্ছে, ২৩ মে কন্ট্রাক্ট কিলাররা নোংরিয়াত গ্রামের অন্য আরেকটি হোমস্টেতে সোনমের আসার অপেক্ষা করছিল। সোনম এসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কিছু ছবি তোলার অজুহাতে রাজাকে তাঁদের হোমস্টে থেকে নিয়ে বের হন। এরপর একটি নির্জন জায়গায় তাঁদের স্কুটি থামান।
ছবি তোলার ভান করে সোনম একটু সামনের দিকে হেঁটে এগিয়ে যান। সোনমের সিগন্যাল পেতেই সুপারি কিলাররা তখন পিছন থেকে এসে রাজার মাথায় ম্যাচেতে বা খুকরি দিয়ে আঘাত করে তাঁকে হত্যা করে।