Abida Sultaan: তিনি ছিলেন ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খানের বড় মেয়ে। প্রিন্সেস। আশ্চর্য জীবন। অদ্ভুত যাপন।
তিনি ছিলেন ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খানের বড় মেয়ে। তৎকালীন সমাজে সাধারণ মেয়েদের মধ্যে এবং মুসলিম মেয়েদের মধ্যে যে রক্ষণশীলতা ছিল, তা তিনি অতিক্রম করেছিলেন। তাঁর নাম আবিদা সুলতান।
২০০৪ সালে প্রকাশিত হল আবিদার আত্মজীবনী 'মোমোয়ারস অব আ রেবেল প্রিন্সেস'। প্রতিদিন ভোর চারটায় তাঁকে ঘুম থেকে উঠতে হত। ছিল খেলাধুলা, সংগীতচর্চা, ঘোড়ায় চড়ার মতো কাজ। আবার ঘরের কাজকর্মও করতে হত।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে ভোপালের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হন আবিদা। এক দশকের বেশি সময় ধরে পরিচালনা করেছিলেন মন্ত্রিসভা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সামনে থেকে দেখেছিলেন তিনি। খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন সাতচল্লিশের দেশভাগের সময়ের উথালপাথাল দিনগুলি।
একবার আবিদা বলেছিলেন, মেয়ে হওয়ার কারণে কোনও হীনম্মন্যতা গ্রাস করেনি আমাকে। সবকিছুই ছিল সমতাপূর্ণ। একজন ছেলের যে স্বাধীনতা ছিল, আমারও তা-ই ছিল। আমরা ঘোড়ায় চড়তে পারতাম, গাছে উঠতে পারতাম, ইচ্ছেমতো যেকোনো খেলাধুলা করতে পারতাম। কোথাও কোনো বাধা ছিল না।
আবিদার দাম্পত্যজীবন অবশ্য খুব অশান্তিপূর্ণ ছিল। তাঁর সংসারজীবন ছিল অল্প দিন স্থায়ী। বিচ্ছেদ হয় তাঁর। আত্মজীবনীতে আবিদা লিখেছিলেন, দাম্পত্যজীবন যে এত ভয়ংকর ও নিরানন্দ হবে, তা বুঝতে পারিনি! ১৯৩৫ সালের মার্চের এক রাতে তিন ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যান আবিদা। ঢুকে পড়েন প্রাক্তন স্বামীর ঘরে। একটি রিভলভার বের করে ছুড়ে দেন তাঁর কোলে। তারপর বলেন, আমাকে গুলি করো, না হলে আমি তোমাকে গুলি করব!
১৯৫০ সালে সন্তানকে নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান আবিদা। সেখানে গণতন্ত্র ও নারী-অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। ২০০২ সালে করাচিতেই মারা যান আবিদা। ভারতভাগের আগে রাজনৈতিক কিছু আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন আবিদা। এ সময়ে মহাত্মা গান্ধী, মতিলাল নেহরু ও জওহরলাল নেহরুর মতো নেতাদের সঙ্গেও দেখা হয়েছিল তাঁর।