Puri Jagannath Dev Rath Yatra: রথযাত্রার দিনে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা যান মাসির বাড়ি। মাসির বাড়ি হল ইন্দ্রদ্যুম্নের পত্নী গুন্ডিচার বাড়ি। সেখানে সাতদিন থেকে ফিরে আসেন মন্দিরে। এটিকেই বলে জগন্নাথের মাসির বাড়ি যাওয়া। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা জানেন?
রথযাত্রার পরের সাতটা দিন জগন্নাথকেই সাক্ষাৎ শ্রীকৃষ্ণ মনে করা হয়। আর গুণ্ডিচা মন্দির তখন যেন পবিত্র বৃন্দাবন। এই মন্দিরকে জগন্নাথের মাসির বাড়ি বলা হলেও, আসলে এই 'মাসি' 'মায়ের বোন' অর্থে নয়।
বরং জানা গিয়েছে, এই 'মাসি' শব্দটি এসেছে 'পৌর্ণমাসী' শব্দ থেকে। কে এই 'পৌর্ণমাসী'?
মাঝের ১৫ দিন কী ঘটে? এই সময়টায় জগন্নাথের জ্বর হয়। তাই তিনি ভক্তদের দেখা দেন না। ১০৮ কলসি জলে স্নানের পরই জ্বর আসে তাঁর।
এ এক অসাধারণ গল্প। মিথে পুরাণে লোককাহিনিতে মাখামাখি। জানা যায়, পৌর্ণমাসী ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের এক গোপী। অন্যান্য গোপীদের মতোই তাঁর সঙ্গেও লীলায় মত্ত হতেন কৃষ্ণ। কিন্তু কৃষ্ণ যখন বৃন্দাবন থেকে দ্বারকায় রাজা হয়ে চলে গেলেন, তখন আর সেখানে গোপীগণ তাঁর সঙ্গে যাওয়ার সুযোগ পেলেন না।
এদিকে দীর্ঘদিন কৃষ্ণকে না দেখে অস্থির হয়ে উঠলেন তাঁরা। সকলে মিলে হাজির হলেন দ্বারকায়। কিন্তু চাইলেই তো আর রাজার দেখা পাওয়া যায় না। দ্বাররক্ষীরা প্রাসাদের ভিতরে ঢুকতে দিলেন না। তাই দ্বারকায় পৌঁছেও কৃষ্ণের দেখা পেলেন না গোপীগণ। মনের দুঃখে ফিরে এলেন নিজগৃহে।
কৃষ্ণ তো অন্তর্যামী। তিনি গোপীদের মনের কথা জানতে পারলেন। তখনই তিনি ঠিক করলেন, প্রতি বছর রথযাত্রার পরে সাতদিনের জন্য পৌর্ণমাসীর বাড়ি যাবেন তিনি। সেখানে গোপীগণের সঙ্গে লীলায় মত্ত হবেন। সেই প্রথা মেনেই আজও পুরীর জগন্নাথ হাজির হন পৌর্ণমাসীর বাড়ি। দিনে দিনে লোককথায় এবং লোকমুখে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে 'মাসির বাড়ি'।
তবে পুরীর গুন্ডিচা মন্দিরের সম্পর্কে আরও কিছু জনশ্রুতি রয়েছে। কথিত আছে, পুরীর মহারাজ ইন্দ্রদুম্ন্য ও তাঁর স্ত্রী এই মন্দিরের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িয়ে। আসলে রাজার স্ত্রী-র নামই ছিল গুন্ডিচা। তাঁকে উদ্দেশ্য করেই বাড়ি একদা তৈরি হয়েছিল, পরে যা মন্দিরের মর্যাদা পেয়েছে। এবং রানির বাড়িই ক্রমে মাসির বাড়িতে পরিণত হয়ে পড়ে। আর প্রতি বছরই রথের সময়ে এই মন্দিরের গুরুত্ব যেন শ্রীমন্দিরকেও ছাপিয়ে যায়।