কমলাক্ষ ভট্টাচার্য ও বিধান সরকার: রথযাত্রা (Rath Yatra) উপলক্ষে কলকাতার ইসকন মন্দির এবং হুগলির শতাব্দি প্রাচীন মাহেশে সাজসাজ রব। অতিমারির কারণে দু'বছর উৎসব বন্ধ থাকায়, স্বভাবতই এবার ভক্ত সমাগম বেশি। সজাগ প্রশাসনও।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে কলকাতার ইসকন মন্দিরের রথযাত্রার (Rath Yatra) শুভ সূচনা। এরপর জগন্নাথ দেব, বলরাম এবং সুভদ্রা রথে চেপে যাবেন ব্রিগেডের গুন্ডিজা মন্দিরে, মাসির বাড়িতে।
রথযাত্রা (Rath Yatra) উপলক্ষে নব কলেবরে সেজে উঠেছেন ইসকনের জগন্নাথ দেব। তাঁর রথের নাথ 'নান্দিঘোষ'।
আনন্দের উৎসবে যোগ দিতে, প্রভুর নব কলেব রূপ দর্শনে প্রায় ১৫০ দেশ থেকে ভক্তরা শনিবার ইসকনে এসেছেন। অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, চিন, আফ্রিকা থেকে অসংখ্য ভক্তের সমাগম হয়েছে।
সকাল থেকে নাচ-গান, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে। সঙ্গে চলছে জগন্নাথ দেব, বলরাম এবং সুভদ্রার আরাধনা। কলকাতার ইসকন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সকালে এক হাজার আট রকমের ভোগ প্রভুকে দেওয়া হয়েছে। দেশ-বিদেশের ভক্তরা নিজেদের সাধ্য মতো ভোগ প্রভুকে নিবেদন করেছেন। যার মধ্য়ে অন্যতম 'রাশিয়ান স্যালাড'।
পুরীর পর সবচেয়ে প্রাচীন শ্রীরামপুরের মাহেশে ৬২৬ বছরের রথযাত্রা (Rath Yatra)। মাহেশের জগন্নাথের অন্য নাম 'নব নীলাচল'। সকাল থেকেই মাহেশের মন্দিরে ভক্তদের ভিড়। সকালেই গর্ভগৃহ থেকে জগন্নাথ দেব, বলরাম এবং সুভদ্রাকে মন্দির প্রাঙ্গণের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই পুজো করা হয়। পুজো দেওয়ার জন্য ভক্তদের দীর্ঘ লাইন পড়ে।
মাহেশে আগে ছিল কাঠের রথ। ১৩৭ বছর আগে মার্টিন বার্ন কোম্পানি তৈরি করে এই লোহার রথ। করোনা অতিমারির কারণে দু'বছর রথযাত্রা (Rath Yatra) স্থগিত ছিল।
রথযাত্রার (Rath Yatra) আগের দু'দিন ধরে চলে 'নবযৌবন উৎসব'। প্রথা অনুযায়ী, স্নান যাত্রার পর মন্দিরের দরজা ভক্তদের জন্য বন্ধ থাকে। ওই সময় জগন্নাথ দেবের জ্বর আসে। কবিরাজের পাঁচন খেয়ে জ্বর সারলে নবযৌবন হয়। প্রভুকে রাজবেশে সাজানো হয়, পরানো হয় রুপোর হাত। রথের দিন ভোরবেলা ভোগ গ্রহনের পর ভক্তদের সামনে আসেন জগন্নাথ মহাপ্রভু। সারাদিন ধরে চলে পুজো।
নারায়ণই যেহেতু কলিকালের জগন্নাথ, সেজন্য নারায়ণ শিলাকে প্রথমে রথে চাপানো হয়। এরপর সুভদ্রা, বলভদ্র এবং জগন্নাথ দেবকে। মাহেশের রথ ম্যানিলা দড়ি দিয়ে টানা হয়। প্রথা অনুযায়ী 'তোপধ্বনী' দিয়ে শুরু হয় রথযাত্রা (Rath Yatra)।
৫০ ফুট উচ্চতার রথটিতে রয়েছে, লোহার ১২টি চাকা। কলকাতার শ্যামবাজারের বসু পরিবার রথটি তৈরি করে। ১২৫ টনের সেই লোহার রথটি রাজপথে গড়াবে।
প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে জানান হয়েছে যে, শ্রীরামপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আগাম সর্তকতা হিসেবে মন্দির প্রাঙ্গণে রাখা হয়েছে স্যানিটাইজার মাপ।