Madhyamik Result 2025: চাঁচোল বাসস্ট্যান্ডে খোলা আকাশের নীচে বেঞ্চ ও টেবিল পেতে রোজ টিকিট বুকিং করেন তিনি। সামান্য আয়ের জন্য ছেলেকে সব বিষয়ের টিউশন দিতে পারেননি তিনি।
রণজয় সিংহ: একেই অভাবের সংসার। তবুও প্রতিকূলতার কাছে হার মানেনি মালদার চাঁচোলের সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউটের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রুদ্রনীল দাস। এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৫৩, অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ।
চাঁচোল সদরের বাসিন্দা রুদ্রনীল অভাবী পরিবারের ছেলে। তার বাবা দীপক দাস বেসরকারি বাসের টিকিট বুকিং কাউন্টারের কর্মী। চাঁচোল বাসস্ট্যান্ডে খোলা আকাশের নীচে বেঞ্চ ও টেবিল পেতে রোজ টিকিট বুকিং করেন তিনি
রুদ্রনীলের বাবা দীপক দাস সামান্য আয়ের জন্য ছেলেকে সব বিষয়ের টিউশন দিতে পারেননি। তবুও রুদ্রনীল নজরকাড়া সাফল্য পেয়েছে। রুদ্রনীলের এই নজরকাড়া সাফল্যে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তার পরিবার ও স্কুল কর্তৃপক্ষ। অবাকও তাঁরা।
এত সাফল্যের পরে কী করবে রুদ্রনীল? রুদ্রনীলের ইচ্ছে চিকিৎসক হওয়ায়। তবে তার বাবা যা আয় করেন, তা দিয়ে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সকলেই চিন্তিত। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা তার স্বপ্নপূরণে বাধা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রায় নানা মহলেরই।
কী বলছেন স্বয়ং রুদ্রনীলের বাবা দীপক দাস, যিনি এত কষ্ট করে মানুষ করেছেন ছেলেকে? রুদ্রনীলের বাবা দীপক দাস বলেন, ছেলের সাফল্যে তিনি খুশি। তিনি বলেন,'এরপর ছেলে যাতে উচ্চশিক্ষায় পৌঁছতে পারে সেই চেষ্টা করব।'
মা শ্বেতা দাস জানেন, ছেলের চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন সফল হবে কি না, তা তাঁর জানা নেই।
রুদ্রনীলের মা-ও মনে করেন, ছেলের সেই স্বপ্নপূরণে বাধা একমাত্র তাঁদের আর্থিক অবস্থাই। ফলে তিনিও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
রুদ্রনীলের মা শ্বেতা দাস বলেন, ছেলে প্রতিদিন পাঁচঘণ্টা পড়াশোনা করত। অযথা মোবাইল ব্যবহার করত না। আমাদের কথা সবসময় শুনেছে।
চাঁচোল সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পার্থ চক্রবর্তী বলেন, প্রতি বছর স্কুলের ভালো ফলই হয়। এ বছরও স্কুলের নাম উজ্জ্বল হয়েছে। উজ্জ্বল করেছে রুদ্রনীল।
রুদ্রনীল অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়ে পড়াশোনা করেছে। প্রথম পরীক্ষার দিন তার দাদুর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান বাড়িতে ছিল বাড়িতে। তবুও তার পরীক্ষা সে কোনও ভাবেই ব্যহত হচে দ্য়নি। তাই সাফল্য পেয়েছে রুদ্রনীল।