Meghalaya Honeymoon Murder: হানিমুনে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু। আঘাত এল নববিবাহিতা স্ত্রীর দিক থেকে। স্বয়ং নবপরিণীতা স্ত্রীই ষড়যন্ত্রী। এবার একে-একে আসছে সমস্ত ডিটেইলস।
৫০০০ টাকার পার্সেল এল সোনমের ইন্দোরের বাড়িতে।
কে পাঠাল? রাজ কুশওয়াহা। সোনমের প্রেমিক তথা রাজা খুনের মূল ষড়যন্ত্রী।
কী ছিল তাতে? গ্রসারি আইটেম। অনলাইনে তা সোনমের ইন্দোরের ঠিকানায় পাঠিয়েছিল রাজ।
এদিকে ইন্দোর সোনমের হাইড-আউট অ্য়াপার্টমেন্ট। ফ্ল্যাট নিয়েও প্রচুর সন্দেহ। প্রথমত, এই বাড়িতে সিসিটিভি নেই। তার উপর এর ল্যান্ড লর্ড কখনও তাঁর টেনান্টকে দেখেননি। এমনকি, তিনি এখন তাঁর ঘরের চাবি ফিরে পেতে আগ্রহী। কেননা, চাবি রয়েছে সোনম কিংবা রাজের কাছে।
রাজা খুনের পরে সোনম পূর্ব খাসি পাহাড় থেকেই বেপাত্তা। তার কোনও খোঁজ নেই, অথচ ইন্দোরের ফ্ল্যাট তার নামে।
বছরছাব্বিশের সোনমের থেকে বয়সে ৫ বছরের বড় ছিল রাজা (৩১) । সোনমের প্রেমিক রাজ ছিল তার থেকে ৫ বছরের ছোট, বয়স ২১। রাজা রঘুবংশীকে বিয়ে করলেও বিয়ের আগে থেকেই সোনমের সম্পর্ক ছিল রাজ কুশওয়াহার সঙ্গে। সোনমের বাবার প্লাইউডের ব্যবসা। সেই কারখানাতেই কাজ করত রাজ। সোনমও তার পড়াশোনা শেষ করার পরে বাবার প্লাইউডের ব্যবসার কাজে যোগ দেয়। সেখানেই তার সঙ্গে রাজ কুশওয়াহার দেখা। বাবার কারখানায় সোনমের সহকর্মীদের একজন ছিল এই রাজ কুশওয়াহা। একই কারখানায় কাজ করার পাশাপাশি রাজ সোনমদের পাড়াতেই থাকত। ঘনিষ্ঠতা থেকেই দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কারখানাতেও তারা মাঝে মাঝে একসঙ্গেই যেত। কারখানার কর্মীরাও তাদের দুজনকে অনেকবার একসঙ্গে দেখেছেন। এমনকি বিয়ের কয়েকদিন আগে রাজ সোনমদের বাড়িতেও আসেন।
এদিকে বাবা-মায়ের চাপে রাজার সঙ্গেই বিয়ে হয় সোনমের। ইন্দোরে ধুমধাম-জাঁকজমক করেই রাজার সঙ্গে বিয়ে হয় সোনমের। কিন্তু কে জানত কী ঘটবে তার পরে! বিয়ের মাত্র ৩ দিন পরই সোনম-রাজ মিলে রাজাকে খুনের ষড়যন্ত্র করে ফেলে! আর খুনের জন্য বেছে নেয় হানিমুন ট্রিপকেই। ১১ মে রাজার সঙ্গে সোনমের বিয়ে। ২০ মে নবদম্পতি মেঘালয়ে হানিমুনে যান। ২৩ মে থেকে নিখোঁজ হয়ে যান রাজা ও সোনম দুজনেই।
এরপর ২ জুন হোমস্টের ধারে পাহাড়ের খাদে রাজার দেহ উদ্ধার হয়। আর তারপর থেকেই নানা সময়ে নানা হাড়হিম তথ্য প্রকাশ। এখন যেমন জানা গিয়েছে খুনের দিন, খুনের কয়েকঘণ্টা আগে-আগে ঠিক কী কী ঘটেছে, কীভাবে খুন হলেন রাজা ইত্যাদি। কী জানা গেল? সেদিন ওয়েই সদং জলপ্রপাত দেখতে সকালেই ট্রেক করতে শুরু করে নবদম্পতি। সকাল ১০টার মধ্যেই ২০০০টা সিঁড়ি ভেঙে ফেলে তাঁরা। তারপরই সহসা তিন ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয় তাঁদের-- আকাশ রাজপুত, বিশাল সিং চৌহান, আনন্দ কুর্মি। রাজার কাছে তারা আগন্তুক, অচেনা, পথের সাথী। কিন্তু সোনমের পরিচিত তারা। বর রাজাকে খুন করার জন্য টাকা দিয়ে তাদেরই ভাড়ে করেছে সে। আপাতত তারাও এদের সঙ্গ নেয় এবং ওয়েই সদং জলপ্রপাত দেখতে হাঁটতে শুরু করে। এদিকে সময় যত গড়ায় নিঁখুত প্ল্যানে কাজ করে চলে সোনম। বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ রাজার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথাও বলে সোনম। তখন ছেলের সঙ্গেও কথা বলেন মা উমা। সেটাই ছেলের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা।
আর এর মাত্র আধ ঘণ্টা পরেই ঘটে অবিশ্বাস্য হাড়হিম ভয়ংকর ভয়াবহ মর্মান্তিক দুঃসাহসিক সেই ঘটনাটি! তখন ওয়েই সদং জলপ্রপাতের পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে দলটি। জলপ্রপাতের পার্কিং লটে যাওয়ার পথেই ওই তিন আগন্তুকের একজন, বিশাল, সিগন্যাল পায় সোনমের থেকে। মুহূর্তের মধ্য়ে মাশিট নামের ভয়ংকর ধারাল অস্ত্রটি দিয়ে রাজার মাথায় আঘাত হানে সে। মারা যায় রাজা। এদিকে সেই অবস্থাতেই, বেলা ২.১৫ নাগাদ সোনম 'সাত জনম কা সাথ হ্যায়' বলে একটি পোস্টও করে! আর ১৫ মিনিট পরে আড়াইটে নাগাদ রাজার শরীর খাদে ফেলে দেয় তারা। জায়গাটি ওয়েই সদং জলপ্রপাতের পার্কিং লট, যেটি রিয়াট আর্লিয়াংয়ে অবস্থিত।