Anubrata Mondal Controversy: ফের খবরের শিরোনামে অনুব্রত মণ্ডল। আইসিকে ফোন করে নোংরা ভাষায় গালমন্দ করে দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছেন তৃণমূল নেতা। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার নানা বাক্যবাণ শোনা গিয়েছে তাঁর মুখ থেকে। চলুন একনজরে দেখে নেওয়া যার অনুব্রত-র সেইসব 'বচন'!
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফের অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। শুক্রবার ভাইরাল হয় একটি অডিয়ো ক্লিপ, যেখানে শোনা যায়, ফোনে বোলপুরের আইসিকে কদর্য ভাষা গালমন্দ করছেন তৃণমূল নেতা। শুক্রবার সকালে সেই অডিয়ো ক্লিপটি পোস্ট করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর তাতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়।
এই অডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরে এক্স হ্য়ান্ডেল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়, 'একজন পুলিস অফিসারের বিরুদ্ধে করা মন্তব্য়কে দল সমর্থন করে না। তিনি যে অবমাননাকর ও অগ্রহণযোগ্য অশালীন ভাষা ব্যবহার করেছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই'। দলের তরফ থেকে অনুব্রতকে জানানো হয়, 'চার ঘণ্টার মধ্য়ে ক্ষমা চান, অন্যথায় শোকজ করা হবে'। অভিযোগ, বুধবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় অনুব্রতর নাম করে আইসি লিটন দাসকে অসংসদীয় ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। আইসিকে কাজল ঘনিষ্ট বলতেও শোনা যায়। যদিও অডিয়োর সত্যতা যাচাই করে জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল।
বোলপুর থানার আইসি অভিযোগের ভিত্তিতে অনুব্রতের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিস। কীভাব ফাঁস অডিয়ো ক্লিপ? তারও তদন্ত হচ্ছে। আগামীকাল, শনিবার বোলপুর থানায় তলব করা হয়েছে কেষ্টকে। শুধু তাই নয়, কমানো হল নিরাপত্তাও। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইলেন অনুব্রত। টাইপ করা চিঠি সঙ্গে করে এনেছিলেন। সাংবাদিক বৈঠকে সেই চিঠিতে সই করে দেন অনুব্রত।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার বিতর্কিত নানা মন্তব্য করেন অনুব্রত মণ্ডল। বারংবার তাঁর একাধিক মন্তব্য় থেকে বিতর্কের জন্ম নিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে বাজার গরম করেছিল অনুব্রতর 'গুড়-বাতাসা' দাওয়াই। অনুব্রত বলেছিলেন, 'ব্লক অফিসে গুড়-বাতাসা, জল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন তৃণমূল কর্মীরা। গরমে মনোনয়ন জমা দিতে গেলে গুড়-বাতাসা আর জল খাওয়ানো হবে।'
গত বিধানসভা ভোটের আগেই অনুব্রতের মুখে শোনা গিয়েছিল 'চড়াম চড়াম' করে ঢাক বাজানোর কথা। এই কথা যে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি বলেন, 'বিরোধীদের জন্য চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজবে।'
এই অনুব্রত মণ্ডলই নির্বাচনের সময় বলেছিলেন, 'কোনও নির্দল প্রার্থীকে ভোট নয়। আর যদি কোনও নির্দল প্রার্থী বাড়িতে হুমকি দেয়, তার বাড়িটা ভেঙে জ্বালিয়ে দিন। আর যদি কোনও প্রশাসন বলে, নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করুন। তাহলে সেই প্রশাসনের পুলিসের গায়ে বোমা মারুন।'
এই অনুব্রত মণ্ডলই বলেছিলেন, 'নকুলদানা খেলে আঙুল অন্য কোথাও যাবে না।' পাশাপাশি, একুশের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের 'খেলা হবে' স্লোগানকে আরও এক ধাপ চড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, 'ভয়ঙ্কর খেলা হবে।' তিনি আরও বলেন, 'হকি নিশ্চয়ই খেলবে। ৫টার পর খেলবে... ৫টার পর ঠান্ডা মাথায় খেলবে।'
ভাইরাল হয়েছিল কেষ্টর পাঁচনও। সেই সময় বলেন,'ময়দানে কংগ্রেস, সিপিআই, বিজেপি কিছুই নেই। বাজানোর জায়গা নেই। কী বাজাব? কিন্তু বাজাতে তো কিছু একটা হবে। ৫ দিন নিশ্চয়ই কিছু একটা বাজাব। পাঁচন ভালো হবে! বীরভূম জেলায় পাঁচন ভালো হবে।'
পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে একবার বলেন, 'পঞ্চায়েত ভোট করবে এখানকার অঞ্চল সভাপতি, ব্লক সভাপতি, বুথ সভাপতি। ওরাই যথেষ্ট! অন্য লোকের দরকার হবে না। কেউ সামনে আসবেন না, কেউ ফাইল করবেন না। চিন্তা নাই! ফাইল করতে যাবে না... কে জানে!'
পুষ্পার ডায়লগ ধার করে অনুব্রত বলেছিলেন, 'নেহি ঝুঁকেগা। ঝুঁকতে অনুব্রত মণ্ডল শেখেনি। জীবনে ঝুঁকিনি। এখনও ঝুঁকব না। আমি কি কাপুরুষ নাকি যে ঝুঁকব? মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়িয়ে থাকি।'