Home> খেলা
Advertisement

FIFA World Cup 2022, ENG vs FRA: ইংল্যান্ডকে 'চোকার্স' প্রমাণিত করে সেমি ফাইনালে চলে গেল ফ্রান্স, এবার সামনে মরক্কো

প্রথম ম্যাচে ইরানকে ৬ গোল দিলেও, ২ গোল হজম করেছিল ইংল্যান্ড। তবে এরপর থেকে গ্যারেথ সাউথগেটের ছেলেরা একটিও গোল হজম করেনি। তাই মনে করা হচ্ছিল ফ্রান্সের স্ট্রাইকাররা ছন্দে থাকলেও, তাদের কাজটা কঠিন হবে। কিন্তু কোথায় কি! সাহেবদের ডিফেন্সকে ভোঁতা করে ১৭ মিনিটেই লিড পেয়ে যায় ফরাসি বাহিনী।

FIFA World Cup 2022, ENG vs FRA: ইংল্যান্ডকে 'চোকার্স' প্রমাণিত করে সেমি ফাইনালে চলে গেল ফ্রান্স, এবার সামনে মরক্কো

সব্যসাচী বাগচী 

ফ্রান্স: ২ ('১৭ চুয়ামেনি, অলিভিয়ের '৭৮ জিহু) 

ইংল্যান্ড: ১ ('৫৪ পেনাল্টি হ্যারি কেন)

 ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa) 'চোকার্স' হলে ফুটবলে নামটা ইংল্যান্ডের (England) সঙ্গে খাপে খাপ মিলে যায়। কারণ সমতা ফেরানোর পর পিছিয়ে যাওয়া এবং এরপর পেনাল্টি থেকে কোন দল গোল মিস করে? সেটা জানা নেই। আর চাপের মুখে পারফর্ম করতে না পারার জন্যই, সাহেবদের ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সেমি ফাইনালে চলে গেল গতবারের বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্স (France)।  আগামি ১৫ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে ফ্রান্সের প্রতিপক্ষ পর্তুগালকে (Portugal) উড়িয়ে দেওয়া মরক্কো (Morocco)। 

এক গোলে এগিয়ে থাকা সুরক্ষিত নয়। একটু ভুল করলেই পা হড়কে যাবে। 'হিরো' বনে যাবেন মুহূর্তের মধ্যে 'ভিলেন'। চুয়ামেনির (Aurelien Tchouameni) কথাই ধরুন। ১৭ মিনিটে দুরন্ত গোল করে ফ্রান্সকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। আল থুয়ামা স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরা সমর্থকরা আনন্দে আত্মহারা। দিদিয়ের দেশঁ (Didier Deschamps) ও তাঁর দলের ফুটবলাররা ধরেই নিয়েছিলেন যে শেষ চারে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। তবে সেই সুখ স্থায়ী হল না। দ্বিতীয়ার্ধে মারাত্মক ভুল করে ফেললেন গোলদাতা চুয়ামেনি। ৫২ মিনিটের মাথায় সাকা (Bukayo Saka) বল নিয়ে এগোতে গেলে তাঁকে পিছন থেকে এসে ডান ফ্ল্যাঙ্ক থেকে ড্রিবল করেন চুয়ামেনি। সেই ফাউলের জন্য বক্সের মধ্যে পড়ে যান সাকা। রেফারি পেনাল্টি দিতে এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফেরান অধিনায়ক হ্যারি কেন (Harry Kane)। এবং একইসঙ্গে ইংল্যান্ডের সর্বকালের সর্বাধিক গোলস্কোরার, ওয়েন রুনিকে ছুঁলেন হ্যারি কেন (Wayne Rooney)।

কিন্তু তাতে কি! ফ্রান্সের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলিভিয়ের জিহু (Olivier Giroud) ফের একবার ত্রাতা হিসেবে দলকে উদ্ধার করলেন। জর্ডন পিকফোর্ড (Jordan Pickford) সাময়িক বাঁচিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সেভ থেকেই কর্নার। এবং কর্নার থেকেই গোলের মুভ। গ্রিজম্য়ানের (Antoine Griezmann) ক্রস প্রতিপক্ষ ডিফেন্সে ধাক্কা খেয়ে তাঁর কাছেই ফেরে। গ্রিজম্য়ানের ক্রস, হেডে গোল অলিভিয়ের জিরোর। ফ্রান্স ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। তবে নাটকের শেষ এখানেই নয়। কারণ ৮২ মিনিটে শুরু হল মহা বিতর্ক। বক্সের মধ্যে মেসন মাউন্টকে ফাউল করলেও, রেফারি খেলা চালিয়ে যান। থিও হার্নান্ডেজের অপ্রয়োজনীয় ফাউল ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ইংরেজ ফুটবলারদের আবেদনে সাড়া দিয়ে অবশেষে 'ভার'-এর (Video Assistant Referee) সাহায্য নেওয়া হল। সেখান থেকে পেনাল্টিও পেল ইংল্যান্ড। তবে এবার বল গোলে ঢোকাতে পারলেন না হ্যারি কেন। তাঁর শট ক্রস বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে গেল। কয়েক মিনিট আগে ইংরেজদের কাছে তাদের অধিনায়ক 'হিরো' হয়ে গিয়েছিলেন। সেই হ্যারি কেন-ই সহজ পেনাল্টি বাইরে মেরে দলকে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে দিলেন! 

fallbacks

এই নিয়ে টানা চারটি বিশ্বকাপে জাতীয় দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন দিদিয়ের দেশঁ। এনগোলো কান্তে , পল পোগবার মতো তারকারা আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন। কাতারে পা রাখার পর চোটের পেয়ে ছিটকে যান ডিফেন্ডার প্রেসনেল কিম্বেম্বে। চোট পেয়ে বাতিলে খাতায় নাম লিখিয়ে দেশে চলে গিয়েছেন দলের সবচেয়ে তারকা করিম বেঞ্জিমা। কিন্তু তাতে কি! টাউনিশিয়া ম্যাচটা বাদ দিলেই গতবারের বিশ্বজয়ীরা কিন্তু দাপট দেখিয়ে চলেছে। 

প্রথম ম্যাচে ইরানকে ৬ গোল দিলেও, ২ গোল হজম করেছিল ইংল্যান্ড। তবে এরপর থেকে গ্যারেথ সাউথগেটের ছেলেরা একটিও গোল হজম করেনি। তাই মনে করা হচ্ছিল ফ্রান্সের স্ট্রাইকাররা ছন্দে থাকলেও, তাদের কাজটা কঠিন হবে। কিন্তু কোথায় কি! সাহেবদের ডিফেন্সকে ভোঁতা করে ১৭ মিনিটেই লিড পেয়ে যায় ফরাসি বাহিনী। কাউন্টার অ্যাটাকে উঠেছিল ফ্রান্স। এমবাপে বিপক্ষের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গ্রিজম্য়ানের দিকে পাস বাড়ান। সেই বল পায়ে পেয়ে যান বক্সের বাইরে থাকা শৌমেনি। বাকি কাজটা একাধিক ডিফেন্ডারের পায়ের ফাঁক থেকে পাওয়ারফুল শটে জালে ঢুকিয়ে দেয়। ফলে ১ গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। 

ভাগ্য সাথ দিলে ফ্রান্স আগেই গোল পেয়ে যেত। অলিভিয়ের জিহু গোলের চেষ্টা করেছিলেন। যদিও জোরালো শট নেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। ইংল্যান্ডের হয়ে ৫০তম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন গোলকিপার জর্ডন পিকফোর্ড। তিনিই সাহেবদের পতনকে বাঁচিয়ে দেন। অবশ্য গোল খেলেও চুপ থেকে যায়নি ইংল্যান্ড। বরং প্রতি আক্রমণে গিয়ে সমতা ফেরানোর লড়াই চালাতে থাকে হ্যারি কেনের দল। 

fallbacks

২৫ মিনিটে বল দখলে নেওয়ার লড়াইয়ে ফ্রান্সের বক্সে পড়ে যান হ্যারি কেন। ইংল্যান্ড পেনাল্টির দাবি জানালে 'ভার'-এর সাহায্য নিয়েছিলেন রেফারি। এবং সেই আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়। এরপর ২৮ মিনিটে হ্যারি কেন আবার বলকে বিপক্ষের জালে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর দূরপাল্লার রুখে দেন ফ্রান্সের গোলকিপার হুগো লরিস। কর্নার থেকে জটলায় গোলের সম্ভাবনা তৈরি হলেও বল ক্লিয়ার করে দেয় ফ্রান্সের ডিফেন্ডাররা।  

যদিও ফ্রান্স লিড ধরে রাখতে পারেনি। শৌমেনির ভুলের খেসারত দিতে হল গতবারের চ্যাম্পিয়নদের। মারাত্মক ভুল করে ফেললেন গোলদাতা শৌমেনি। ৫২ মিনিটের মাথায় সাকা বল নিয়ে এগোতে গেলে তাঁকে পিছন থেকে এসে ড্রিবল করেন শৌমেনি। সেই ফাউলের জন্য বক্সের মধ্যে পড়ে যান সাকা। রেফারি পেনাল্টি দিতে এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফেরান অধিনায়ক হ্যারি কেন। তবে ফ্রান্সের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলিভিয়ের জিহু ফের একবার ত্রাতা হিসেবে দলকে উদ্ধার করলেন। জর্ডন পিকফোর্ড সাময়িক বাঁচিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সেভ থেকেই কর্নার। এবং কর্নার থেকেই গোলের মুভ। গ্রিজম্য়ানের ক্রস প্রতিপক্ষ ডিফেন্সে ধাক্কা খেয়ে তাঁর কাছেই ফেরে। গ্রিজম্য়ানের ক্রস, হেডে গোল অলিভিয়ের জিরোর। ফ্রান্স ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। তবে নাটকের শেষ এখানেই নয়। কারণ ৮২ মিনিটে শুরু হল মহা বিতর্ক। বক্সের মধ্যে মেসন মাউন্টকে ফাউল করলেও, রেফারি খেলা চালিয়ে যান। থিও হার্নান্ডেজের অপ্রয়োজনীয় ফাউল ছিল। তবে ইংরেজ ফুটবলারদের আবেদনে সাড়া দিয়ে অবশেষে 'ভার'-এর সাহায্য নেওয়া হল। সেখান থেকে পেনাল্টিও পেল ইংল্যান্ড। তবে এবার বল গোলে ঢোকাতে পারলেন না হ্যারি কেন। তাঁর শট ক্রস বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে গেল। ফলে লিড ধরেই রেখেছিল ফ্রান্স। আর সেই সঙ্গেই নিশ্চিত হয়ে যায় ব্রিটিশ বাহিনীর বিদায়। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কেনদের লড়াই বহুদিন মনে রাখবেন ফুটবলপ্রেমীরা। শেষ চারে গ্রিজম্যানদের প্রতিপক্ষ মরক্কো।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

Read More