জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ষষ্ঠ দিনে পা রেখেছে কাতার বিশ্বকাপ (FIFA World Cup 2022) শুক্রবারের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হল ওয়েলস-ইরান (Wales v Iran)। এদিন আল রায়ান স্টেডিয়াম দেখল 'ফ্রাইডে ব্লকব্লাস্টার'। চূড়ান্ত নাটকীয় এবং রুদ্ধশ্বাস বললেও কম বলা হবে। ৯০ মিনিট পর্যন্ত খেলার ফল ছিল গোলশূন্য। নিস্ফলা ম্যাচ এবং পয়েন্ট ভাগাভাগির কথা লিখে ফেলেও, বদলে ফেলতে হল ম্যাচ রিপোর্ট। যেন হিচককের সাসপেন্স থ্রিলার! বলতেই হবে 'ফুটবল ইউ বিউটি'। ধারে ভারে ও নামডাকে এগিয়ে থাকা ইউরোপের ফুটবল দেশ ওয়েলসের চোখের জল বার করে দিল পশ্চিম এশিয়ার দল। ৯০ মিনিটের খেলা শেষের পরেই রেফারি জানিয়ে দেন যে, খেলা চলবে আরও নয় মিনিট। আর সেখানেই পরপর দুই গোল করে বাজিমাত করল কার্লোস কুইরোজের শিষ্যরা। আর ম্যাচের পর ফুটবলাররা ছুটে গেলেন ডাগআউটে। পতুর্গিজ কোচকে কাঁধে তুলে শূন্যে ছুড়ে দিলেন তাঁরা। যেন বিশ্বকাপই জিতে গিয়েছে ইরান। এই আনন্দ শুধুই অবিশ্বাস্য ও চমকপ্রদ জয়ের নয়, এই আনন্দ বাকি দেশগুলিকে জানান দেওয়ার যে, ইরানও আছে বিশ্বকাপে। তাদেরকেও ধরতে হবে লড়াইতে।
‘বি’ গ্রুপের এই ম্যাচের প্রথমার্ধে সেভাবে কোনও চমক ছিল না। কোনও দলই খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি সেভাবে। ওয়েলস চারটি শট নেয়, ইরান নেয় দু'টি। তবে সেই শটগুলিতে কখনই গোলের ঠিকানা লেখা ছিল না। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৫১ মিনিটে ইরানের দোসর হল দুর্ভাগ্য। ১০ সেকেন্ডের মধ্যে দু'বার পোস্টে বল লেগে ফিরে আসে! ইরানের ফুটবলাদের তখন মাথায় হাত। তবে ফুটবল বিধাতার ছিল অন্যরকম পরিকল্পনা। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ওয়েলস গোলরক্ষক হেনেসে সুইপার কিপারের ভূমিকাতে ধরা দিয়েছিলেন। বক্স ছেড়ে ৩০ গজ দূরে চলে যান। ইরানের তারেমিকে রুখে দেওয়ার জন্য পা উুঁচিয়ে তাঁকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু রেফারি সঙ্গে সঙ্গে হলুদ কার্ড দেন। এরপর তিনি ছুটে যান সাইডলাইনে ভিএআর প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়ার জন্য়। ভিএআর দেখেই তিনি লাল কার্ড দেখিয়ে বার করে দেনে হেনেসেকে। তাঁর বদলে মাঠে নামেন ড্যানি ওয়ার্ড। উঠে যান অ্যারন ব়্যামসে। ফ্রি-কিক পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি ইরান। ৯৮ মিনিটে রোজবে চেশমির বক্সের বাইরে থেকে আগুনে শটই ইরানের ভাগ্য লিখে দিয়েছিল। কিন্তু ৯০+১১ মিনিটে রামিন রাজেয়ান ওয়েলসের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন।
বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে ইউএসএ-র বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করেছিওয়েলস। গ্যারেথ বেলের পেনাল্টিতে এসেছিল এক পয়েন্ট। এদিন হেরে গিয়ে ওয়েলস পরের রাউন্ডে যাওয়ার রাস্তা অনেকটাই কঠিন করে ফেলল। ১৯৫৮ সালের সুইডেন বিশ্বকাপের পর আর কখনও বিশ্বকাপে কোনও ম্যাচ জেতেনি ওয়েলস। বেলরা এদিন ইতিহাস লেখার সুযোগ হাতছাড়া করলেন। অন্যদিকে ইরান প্রথম ম্যাচেই ইংল্যান্ডের কাছে বাজে ভেবে হেরেছিল। হ্যারি কেন অ্যান্ড কোংরা জিতেছিল ৬-২ গোলে। বিশ্বকাপে টিকে থাকার জন্য এই ম্যাচ ইরানের কাছে ছিল কার্যত মরণ-বাঁচন লড়াই। হয় জয়, নয় ড্র। হারলে কিন্তু বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হয়ে যেত। ২০০৬ সালের জার্মানি বিশ্বকাপ ছাড়া আর কোনও বিশ্বকাপে ব্যাক-টু-ব্যাক ম্যাচে পরাজিত হয়নি ইরান। দুরন্ত প্রত্যাবর্তনে এদিন ফুটবল ফ্যানদের মনে জায়গা করে নিল এই টিম।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)