শুভপম সাহা ও তনুময় দাস: ইতিহাস আর মোহনবাগান (Mohun Bagan) সমার্থক। ১৯১১ সালে খালি পায়ে ব্রিটিশদের হারিয়ে আইএফএ শিল্ড (IFA Shield 1911) জিতেছিল যে দল, সেই দলটার নাম ছিল মোহনবাগান। ১১ জন বাঙালির গায়ে ছিল সবুজ-মেরুন জার্সি। আর সেই মোহনবাগানেরই কান্ডারী স্বপনসাধন বসু ওরফে টুটু বোস (Tutu Bose)। তিনি নিজেই আজ প্রতিষ্ঠান। টুটু জমানাতেই প্রথমবার বিদেশি ফুটবলার খেলানোর সিদ্ধান্ত নেয় মোহনবাগান। চিমাকে সই করান ক্লাবের তত্কালীন সচিব টুটু। আবার সচিত্র পরিচয় পত্রে ক্লাবে নির্বাচন, তাতেও অগ্রণী ছিলেন তিনিই। এবার মোহনবাগান দিবসে মোহনবাগান রত্ন তুলে দেওয়া হল তাঁর হাতেই। এ যেন গঙ্গা জলে গঙ্গা পুজোই! তিনিই প্রথম এই পুরস্কার দেওয়া চালু করেছিলেন ক্লাবের ইতিহাসে।
মোহনবাগান রত্ন পেয়ে আবেগি টুটু
'এবার শুনবেন রত্নটা পেয়ে আমার কীরকম লাগছে? ছোটবেলায় আমি শুনতাম, কেউ ফার্স্ট হলে, একটু ঘ্যাম দেখালে বলত, তুই কী হাতে চাঁদ পেয়েছিস! সেইদিন ছোটবেলায় শুনেছিলাম চাঁদ পাওয়ার গপ্প। এটা হাতে পেয়ে মনে হচ্ছি আমি চাঁদ পেয়েছি।' এরপরেই চোখের জলে ভেঙে পড়েন ক্লাবের 'গডফাদার'
পরজন্মে লাইফ মেম্বার
'তোরা দেখছিস, শরীরটা ভেঙে যাচ্ছে! হয়তো আর তোদের সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না! একটা কাজ কিন্তু আমি করে যাচ্ছি, শুনে নে...। এবার ১৯টা লাইফ মেম্বার হয়েছে। শুনতে খারাপ লাগে না? ১৯টা কী রে, ২০টা হওয়া উচিত। এই ১ লাখ টাকার সঙ্গে আরও ৪ লাখ টাকার চেক আমি কাল ক্লাবে পাঠিয়ে দিচ্ছি। ২০ নম্বর লাইফ মেম্বার যেন পরজন্মে টুটু বসু হয়।'
ক্যান্টিনের নামকরণ
'একটু অনুরোধ বর্তমান কমিটিকে, আমি খেতে ভালোবাসি। আমার চেহারা দেখে বুঝতে পারছেন। ক্যান্টিনটা আমি ৩০ লাখ টাকা দিয়ে করে দিয়েছিলাম। কেউ বসত না। কাজুর সেই ক্যান্টিনে আমি আর সুব্রত মুখোপাধ্যায় স্টু-পাউরুটি খেয়ে উদ্বোধন করেছিলাম। সুব্রত মারা গিয়েছে, আমার অত্যন্ত ভালো বন্ধু। আমি মরে গেলে ক্যান্টিনটা দয়া করে টুটু বসুর নামে করে দেবেন। সেটা আবার অন্য কারোর নামে করে দেবেন না, যাতে টুটু বসুর নামটা মুছে দেওয়া যায়। মুছতে পারা যাবে না।'
আরও পড়ুন: ফুটবলে ভারতসেরা, আবার ক্যান্টিনও... মোহনবাগানের মুকুটে নয়া পালক...
এবার কে কী পেলেন:
বর্ষসেরা ফরোয়ার্ড হয়েছেন জেমি ম্যাকলারেন!
বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন আপুইয়া।
সেরা প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার হলেন দীপেন্দু বিশ্বাস।
সেরা অ্যাথলিট হলেন অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেরা হকি খেলোয়াড় হলেন অর্জুন শর্মা।
সেরা ক্রিকেটার হলেন রণজোত্ সিং খাইরা।
লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্টে পেলেন ক্রিকেটার রাজু মুখোপাধ্যায়।
সেরা সমর্থক হয়েছেন রিপন মণ্ডল। প্রতুল চক্রবর্তী নামাঙ্কিত সেরা রেফারির পুরস্কার দেওয়া হয় মিলন দত্তকে। মতি নন্দীর নামে সেরা ক্রীড়া সাংবাদিকের মরণোত্তর পুরস্কার পান অরুণ সেনগুপ্ত ও মানস চক্রবর্তী।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহনবাগানের সভাপতি দেবাশিস দত্ত, সচিব সৃঞ্জয় বসু। পাওয়া গেল রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রী-অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, মনোজ তিওয়ারি, স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও বাবুল সুপ্রিয়। এসেছিলেন মোহনবাগানের প্রাক্তন ক্রিকেটার ও প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, তাঁর দাদা ও সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। এসেছিলেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন অমর একাদশের পরিবারের সদস্যরাও।
আরও পড়ুন: কল্যাণীর স্নিগ্ধ মাটি, লাল-হলুদের শক্ত ঘাঁটি', সায়ন ধামাকায় ডার্বি ইস্টবেঙ্গলের...
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)