Home> রাজ্য
Advertisement

Ram Temple: আশ্চর্য! ২৬০ বছর আগেই বাংলায় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল রামমন্দির! লন্ডনের জার্নালে তার বিবরণও প্রকাশিত হয়েছিল, জানেন?

300 Years Old Ram Temple in Bengal: নদিয়ার মাজদিয়া থেকে ৩ কিমি দূরে শিবনিবাস গ্রাম। মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র বাংলায় বর্গী আক্রমণের সময়ে তাঁর রাজধানী সদর শহর কৃষ্ণনগর থেকে সরিয়ে এখানে এনেছিলেন। আর এখানেই ঘটে গেল এই আশ্চর্য কাণ্ড! নীরবে!

Ram Temple: আশ্চর্য! ২৬০ বছর আগেই বাংলায় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল রামমন্দির! লন্ডনের জার্নালে তার বিবরণও প্রকাশিত হয়েছিল, জানেন?

অনুপকুমার দাস: এই বাংলায় ২৫৭ বছর আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রামমন্দির! ব্রিটিশ শাসনকালেই রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় এই রামমন্দির প্রতিষ্ঠিত করেন। এই রামমন্দিরে কষ্টিপাথরের রাম এবং সীতার বিগ্রহ রয়েছে। এই রামমন্দির সম্বন্ধে কম লোকই জানেন। যে কজন জানেন, তার চেয়েও অনেক কম সংখ্যক ভক্তদের সেবাতেই এখানে পূজিত হন রামসীতা। মন্দিরটির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। পূজারী-সহ সাধারণ মানুষের দাবি, এই মন্দিরের দিকে একটু নজর দিলেই মন্দিরটির উন্নতি হবে। 

Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News

নদিয়া জেলার মাজদিয়া থেকে ৩ কিমি দূরে  শিবনিবাস গ্রাম। তৎকালীন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র বাংলায় বর্গী আক্রমণের সময়ে তাঁর রাজধানী নদীয়ার সদর শহর কৃষ্ণনগর থেকে সরিয়ে এই শিবনিবাসে চালু করেছিলেন। শিবের নামে  জায়গাটির নামকরণ করেন  শিবনিবাস। এখানে তিনি সুন্দর রাজপ্রাসাদ ও কয়েকটি  মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার মধ্যে এখন মাত্র তিনটি মন্দির অবশিষ্ট আছে। দু'টি শিব মন্দির একটি রামমন্দির। প্রতিটি মন্দিরের উচ্চতা ৬০ফুট। 

এই শিবনিবাসে রাজধানী প্রতিষ্ঠার একটি কাহিনি আছে। মহারাজ  কৃষ্ণচন্দ্র নসরত খাঁ নামক এক দুর্ধর্ষ ডাকাতকে দমন করতে মাজদিয়ার  কাছে এক গভীর অরণ্যে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে ডাকাতকে দমন করে একরাত অবস্থান করেন। পরদিন সকালবেলা তিনি যখন নদীতীরে মুখ ধুচ্ছিলেন তখন একটি রুইমাছ জল থেকে লাফিয়ে মহারাজের সামনে এসে পড়ে। আনুলিয়ানিবাসী কৃষ্ণরাম নামক মহারাজের এক আত্মীয় তখন মহারাজকে বলেন, দেখুন মহারাজ! এই স্থান অতি রমণীয়, উপরন্তু রাজভোগ্য সামগ্রী  নিজে থেকেই মহারাজের সামনে এসে হাজির হয়। তাই এই স্থানে মহারাজ বাস করলে মহারাজের নিশ্চয়ই ভাল হবে। 
মহারাজও তখন বর্গীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই রকমই একটা  নিরাপদ  জায়গা  খুঁজছিলেন। স্থানটি মনোনীত হলে রাজা নদীবেষ্টিত করে  স্থানটি  সুরক্ষিত  করেন। পরে এখানে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র মহাসমারোহে অগ্নিহোত্র বাজপেয়  যজ্ঞ  সম্পন্ন করেন। এই উপলক্ষ্যে কাশী, কাঞ্চী প্রভৃতি স্থান  থেকে সমাগত পণ্ডিতমণ্ডলী তাঁকে 'অগ্নিহোত্রী  বাজপেয়ী' আখ্যাও প্রদান করেন। সেই সময়ে শিবনিবাস কাশীতুল্য বলে পরিগণিত হত। 

আরও পড়ুন- Ram Navami 2025 Zodiac: এই রামনবমীতে কোন কোন রাশির জাতকেরা তুমুল সাফল্যের মুখ দেখবেন, হাতে আসবে বিপুল টাকা?

আরও পড়ুন- Horoscope Today: মেষের আর্থিক সাফল্য, বৃষের এনার্জি, কর্কটের অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি! জেনে নিন, আজ কেমন কাটবে আপনার দিন...

রাজাধানীর প্রতিষ্ঠাকাল ১৭৫৪  খ্রিস্টাব্দ। তখনই তিনি মন্দিরগুলি প্রতিষ্ঠা করেন। একটি  বড় ৯ ফুট কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ  প্রতিষ্ঠিত করে নিত্যপূজো শুরু হয়। পাশেই আরো একটি শিবমন্দির 'রাজ্ঞীশ্বর' নাম তাঁর। পরে একটি রামমন্দিরও প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকাল ১৬৮৪ শকাব্দ  অর্থাৎ, ১৭৬২  খ্রিস্টাব্দ। মন্দিরে একটি  প্রতিষ্ঠাফলক আছে। প্রতিষ্ঠাফলকে উৎকীর্ণলিপি থেকে জানা যায়,  মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের দ্বিতীয়া মহিষী যেন স্বয়ং মূর্তিমতী লক্ষ্মী ছিলেন। সম্ভবত দ্বিতীয় মন্দিরটি মহারাজা তাঁর দ্বিতীয়া মহিষীর জন্যই নির্মাণ করেছিলেন, প্রথমটি  প্রথম মহিষীর জন্য। এই মন্দিরের শিবলিঙ্গ  প্রথম মন্দিরের চেয়ে  কিছুটা ছোট-- উচ্চতা সাড়ে সাত ফুটের। 

এর পাশেই  রামসীতার মন্দির। মন্দিরটি উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত।  আংশিক দালান  আকারের কোঠার  উপর একটি  শিখর স্থাপিত, যা অনেকটা বর্গক্ষেত্রাকার। দালানের  প্রতিটি  ছাদ সমদ্বিবাহু  ট্রাপিজিয়াম  আকৃতির এবং গর্ভগৃহের  প্রতিটি  ছাদ ত্রিভুজাকার না হয়ে অনেকটা  ঘণ্টার লম্বচ্ছেদের মতো বিরল আকৃতির। দালান ও শিখরের খিলানগুলি  গথিক রীতি অনুযায়ী নির্মিত। বলা বাহুল্য, শিবনিবাসের এই  মন্দিরগুলিতে টেরাকোটার  কোনও কাজ  নেই। ১৮২৪  খ্রিস্টাব্দে  বিশপ  হেয়ার সাহেব নৌকা করে ঢাকা যাওয়ার পথে এখানে নেমে মন্দিরগুলি দেখেন এবং মুগ্ধ হন। মন্দিরগুলির বিবরণ  ১৮২৮  খ্রিস্টাব্দে  লন্ডন  থেকে প্রকাশিত  জার্নালে  প্রকাশও করেন তিনি। আজ রাম নবমীতেও পুজো হচ্ছে এই মন্দিরে। ভক্তরা বলেন, রাম কোনো দলের নয়, রাম সবার!

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

Read More