মনোজ মণ্ডল: ভারতের সেনাবাহিনীতে নিয়োগসংক্রান্ত ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ (Protest Against Agnipath Scheme) দেখা গিয়েছে। যেসব রাজ্য থেকে বিপুলসংখ্যক তরুণ সেনাবাহিনীর নিচের দিকের কর্মী হিসেবে যোগ দেন, যেমন বিহার, উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানা, বিক্ষোভের আঁচ বেশি পড়েছে এই রাজ্যগুলিতেই। এবার পশ্চিমবঙ্গেও কিছুটা প্রভাব পড়ল এই প্রকল্পের। প্রতিবাদে ঠাকুরনগরে বনগাঁ শিয়ালদা লাইনে রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা। এমনকী বিভিন্ন রাজ্যে রেল অবরোধের প্রভাব পড়ল বাংলায়।
সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার এই নতুন একটি পরিকল্পনায় বলা হয়েছে চার বছরের জন্য সামরিক বিভাগে নিয়োগ করা হবে। বিক্ষোভের মুখে নিয়ম কিছু শিথিল করে কেন্দ্র। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছিল, অগ্নিপথ প্রকল্পে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের তরুণেরা। সেই নিয়ম বদলে এবার বয়সের ঊর্ধ্বসীমা করা হল ২১ থেকে ২৩৷ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে ঠাকুরনগরে রেল অবরোধ হল। যার জেরে ব্যস্ত সময়ে চরম দুর্ভোগে নিত্যযাত্রীরা। বিক্ষোভের জেরে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় রেল পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
অবরোধের জেরে দাঁড়িয়ে ডাউন বনগাঁ-মাঝেরহাট লোকাল। আপ লাইনে গোবরডাঙা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করছিল। কিন্তু, প্রায় এক ঘন্টা অবরোধ চলার পর রেল পুলিস ও রাজ্য পুলিস অবরোধকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। আপাতত ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, 'অগ্নিপথ' প্রকল্প ঘিরে মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে দেশের একাধিক রাজ্যে। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, দিল্লির মতো রাজ্যে প্রতিবাদ, আন্দোলন হিংসাত্মক আকারও ধারণ করে। বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ছাড়াও, সেনাবাহিনীর চাকরি চুক্তিভিত্তিক করে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান পড়ুয়া এবং চাকরিপ্রার্থীরা। কোথাও ভাঙচুর চালানো হয় ট্রেনে, কোথাও টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ, কোথাও আবার পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি, ট্রেন অবরোধ। পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটানোর চেষ্টা করে পুলিস। ব্যাপক লাঠিচার্জও করা হয় ।