অয়ন ঘোষাল: সর্বশেষ উপগ্রহ চিত্র অনুযায়ী দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপ আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘুর্নিঝড় মোকা-তে পরিণত হতে চলেছে। এই সিস্টেম এই মুহুর্তে পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৫১০ কিলোমিটার, বাংলাদেশের কক্স বাজার থেকে ১৪৮০ কিলোমিটার এবং মায়ানমারের স্বিত্তে থেকে ১৩৬০ কিলোমিটার দুরে অবস্থান করছে। ঘুর্নিঝড়ের গঠন সম্পূর্ণ হলে সমুদ্র পৃষ্ঠ দিয়ে এটি উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোবে।
সমুদ্র থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করতে করতে এটি অগ্রসর হবে। ফলে কাল অর্থাৎ ১১ মে সকালে এটি প্রবল ঘুর্নিঝড় এবং কাল বিকেলের মধ্যে অতি প্রবল ঘুর্নিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে। শক্তি সঞ্চয় সম্পূর্ণ হলে এটি বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলের অন্তর্বর্তী কক্স বাজার (বাংলাদেশ) এবং কিউকপ্যু (মায়ানমার) উপকুল এলাকার মধ্যে কোনও একটি লোকেশনের দিকে ল্যান্ড ফলের উদ্দেশ্যে এগোবে। ১৪ মে মোকা-র সম্ভাব্য ল্যান্ডফলের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সেই সময় এই অতি প্রবল ঘুর্নিঝড়ের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ গতিবেগ এবং নির্দিষ্ট ল্যান্ডফল লোকেশন ঠিক কি হতে চলেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। নিবিড় পর্যবেক্ষণ রাখছে দিল্লীর মৌসম ভবন।
পশ্চিমবঙ্গ
আরও পড়ুন: Theft: পাগল সেজে পোস্ট অফিসে ঢুকল চোর! চোখের নিমেষে উধাও ৫০ হাজার টাকা...
মোকা-র বিপরীত প্রতিবর্ত ক্রিয়া বাংলায়
গাঙ্গেয় ও পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণবঙ্গ থেকে সমস্ত জলীয় বাষ্প শুষে নিচ্ছে মোকা। বাড়াচ্ছে নিজের শক্তি। বঙ্গে বুধবারও শুষ্ক তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি রয়েছে। এই পরিস্থিতি চলবে আগামিকাল অর্থাৎ বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত। তাপপ্রবাহ ও লু-এর মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে উত্তরবঙ্গের তিন জেলাতেও।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কতা দক্ষিণবঙ্গে। পশ্চিমে পারদ ৪২-৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছাবে বলে জানা গিয়েছে। মোকার পরোক্ষ প্রভাবে বুধবার চুড়ান্ত অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকবে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাংলায় ঝড়-বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: কেষ্টহীন বীরভূমে 'নবজোয়ার', অভিষেকের মুখে অনুব্রতের নাম...
তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে। ১০ মে বুধবার তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতে। ব্যতিক্রম পূর্ব মেদিনীপুর ও কলকাতা। বুধবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা থাকবে উত্তরবঙ্গের মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম সহ পশ্চিমের জেলাগুলিতে।
মোকার প্রভাবই বঙ্গোপসাগরের দিকে টেনে নিচ্ছে সমস্ত জলীয় বাষ্প। উত্তর পশ্চিমের গরম বাতাসের প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে। জলীয় বাষ্প ক্রমশ কমছে রাজ্যের বাতাস থেকে। দক্ষিণবঙ্গে তাই লু-এর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বলছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আবহাওয়াবিদরা।
কলকাতা
সকাল আটটার পর থেকেই চুড়ান্ত অস্বস্তিকর আবহাওয়া দেখা যাবে। দিনের তাপমাত্রা কাল ছিল ৩৮.৯ ডিগ্রি। আজ তা বেড়ে প্রায় ৪০ এর ঘরে পৌছাতে পারে। রাতের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেড়ে ২৯.১ ডিগ্রি হবে।