রণজয় সিংহ: তপসিলি জাতি শংসাপত্রই জাল! মালদার হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্যা সুলেখা সিংহর সদস্যপদ খারিজ করল প্রশাসন। ভুয়ো সার্টিফিকেট দাখিল করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন সুলেখা সিংহ বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করে প্রশাসন। শোকজ নোটিশ দেওয়া হয় সুলেখা সিংহকে। কিন্তু মালদার জেলা শাসকের দাবি সেইসব নোটিশের কোন উত্তর দেননি সুলেখা সিংহ। বরং তিনি ১৫ দিন সময় চেয়েছিলেন । কিন্তু সোমবার ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন রয়েছে। তাই প্রশাসনিক তদন্তে সার্টিফিকেট ভুয়ো প্রমাণিত হওয়ায় তার সার্টিফিকেট বাতিলের পাশাপাশি সদস্যপদ ও খারিজ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-র্যাগিং আড়াল করার চেষ্টা! বিস্ফোরক পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায়
এই ঘটনায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেখছে বিজেপি। ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি ১৭ টি আসন দখল করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। তৃণমূল পায় ১৩টি আসন, সিপিএম দুটি এবং কংগ্রেস একটি আসনে জয়লাভ করে। বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর অভিযোগ, যেন তেনো প্রকারে পঞ্চায়েত সমিতি দখল করার জন্য তৃণমূল ষড়যন্ত্র করছে। তাই প্রশাসনের মদত নিয়ে তাদের সদস্য সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি। তিনি বলেন কেউ জাল সার্টিফিকেট দিয়ে ভোটে লড়লে তার সার্টিফিকেট বাতিল হবে এটাই স্বাভাবিক।এতে তৃণমূলের কোনো ব্যাপার নেই প্রশাসন আইন মোতাবেক কাজ করেছে। মালদার জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, ভূয়ো সার্টিফিকেট জমা করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ওই বিজেপি সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন সবে শেষ হয়েছে। বোর্ড গঠনের কাজ চলছে। গোটা রাজ্য দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস কীভাবে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি দখল করার চেষ্টা করছে। এর জন্য যা করার তা করছে। এবার একটা নতুন কৌশল ওরা নিয়েছে। আমাদের এখানে ১৪ আগস্ট হবিবপুরের পঞ্চায়েত সমিতি গঠন হচ্ছে। তার আগে ওরা একটা নোটিস করেছে। হবিবপুরের ডোমপুর পঞ্চায়েত সমিতি আসন থেকে যিনি জিতেছেন সেই সুলেখা সিংহ। তাঁর সদস্যপদ কীভাবে খারিজ করা জায় তার একটি কৌশল বের করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ওঁর যে তপসিলি জাতি-র সার্টিফিকেট সেটাকে বাতিল করার জন্য তোড়জোড় করছে। ইতিমধ্যেই হেয়ারিং করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত তারা বলতেই পারছেন সেই হেয়ারিংয়ের রেজাল্ট কী। গতকাল রাত দশটার সময়ে একটি নোটির পাঠানো হয়েছে সুলেখার বাড়িতে। সেখানে লেখা হয়েছে, আপনার সদস্যপদ বাতিল হবে না কেন তার জবাব দিন। শনিবার অফিসে ডাকা হয়। কিন্তু সেখানে কেউ ছিল না। হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে ম্যাজিক ফিগার পেয়েছে বিজেপি। সেখান থেকে সংখ্য়া কীভাবে কমানো যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। এটাই হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্যদিকে, জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির দাবি জালিয়াতি করে একজন ভোটে দাঁড়িয়ে গেল। এতবড় অন্যায়। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত। তাকে সমর্থন করছেন সাংসদ। তাহলে ভাবতে হবে তিনিও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। আমাদের পার্টিতে াকিছু করেনি। প্রশাসন যা করার করেছে। প্রশাসন দেখেছে সে সার্টিফিকেট দেখিয়ে উনি ভোটে দাঁড়ান তা জালিয়াতি করা সার্টিফিকেট। তাঁকে তো জেলে দেওয়া উচিত।