অরূপ বসাক: পঞ্চায়েত প্রধানকে কটাক্ষ করে বিতর্কে মন্ত্রী বুলু চিক বড়াইক। প্রকাশ্যে এলো তৃণমুলের গোষ্ঠী কোন্দল। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের উদ্যোগে বাগরাকোটের মীনা মোড় থেকে বটগাছতলা পর্যন্ত ১৪০০ মিটার রাস্তার আনুষ্ঠানিক শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনন্তসিয়া খেস ও উপপ্রধান সরিতা শাহির অনুপস্থিতর জেরে মন্ত্রী বলেন, ‘বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনন্তসিয়া খেস বছরের বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকেন। তিনি তো অফিসেই আসেন না। এখানে আসবেন কী করে?’
এরপরই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বাগরাকোট এলাকায় গত কয়েকবছরে মিনি স্টেডিয়াম, কমিউনিটি হল, রাস্তা, কালভার্ট, বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের প্রকল্পের মতো উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে বুলুর দ্বিতীয় বিতর্কিত মন্তব্য, ‘বাগরাকোটে সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণে বর্তমানে তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সভাপতি রাজেশ ছেত্রীর নেতৃত্বে যা কাজ হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের বিপুল সমর্থন নিয়ে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করব’।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে কি বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতে বর্তমানে যারা ক্ষমতাসীন, তাঁরা তৃনমূলের প্রতিনিধি নন? জবাব দিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অনন্তসিয়া খেস ও উপপ্রধান সরিতা শাহি। অনন্তসিয়া খেস মন্ত্রী বুলু চিক বড়াইকের মন্তব্যকে নস্যাৎ করে বলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে দুই বছর আগে বেশ কিছুদিন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আসতে পারিনি। সুস্থ হতেই গত প্রায় দেড় বছর ধরে প্রধানের দায়িত্ব সামলাতে নিয়মিত অফিসে আসছি। তারপরও একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী হয়ে কিসের ভিত্তিতে উনি এমন মন্তব্য করলেন তা বিস্ময়কর!’
আরও পড়ুন: Jalpaiguri: পাওয়া যাচ্ছেনা 'এ-নেগেটিভ' রক্ত, ১৫ মিনিটে ডোনারের ব্যবস্তাহ পুলিস সুপারের
একইসঙ্গে বুলু চিক বড়াইকের বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত দখলের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সরিতা শাহি বলেন, ‘মন্ত্রীর এই বক্তব্যের অর্থ কী? বিরোধীশূন্য ২০ সদস্য বিশিষ্ট মাল ব্লকের বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতে আমরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত। ২০১৩ সাল থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে রয়েছে। সুতরাং মন্ত্রীর মন্তব্য পুরোপুরি অনভিপ্রেত।’ বৃহস্পতিবার বাগরাকোটে রাস্তার শিলান্যাস অনুষ্ঠানের বিষয়েও তাদের কিছুই জানানো হয়নি বলে প্রধান ও উপপ্রধান জানিয়েছেন।
এই মুহূর্তে বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের দুটো গোষ্ঠী একেবারে আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে রয়েছে বলে দাবি করেন বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান সরিতা সাহী।
আরও পড়ুন: Bengal Weather Update: চৈত্রের পয়লা তারিখেই মরশুমের প্রথম কালবৈশাখি, স্বস্তি ফিরল বঙ্গে
এক গোষ্ঠীর যে কোনও অনুষ্ঠানে অপর গোষ্ঠীর নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ না জানানোর অলিখিত নিয়ম গত বেশ কয়েকমাস ধরেই এখানে জারি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই ধারা বজায় রেখেই বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বটগাছতলা মোড়ে আয়োজিত দলীয় অনুষ্ঠানেও বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনন্তসিয়া খেস বা উপপ্রধান সরিতা শাহি অনুপস্থিত ছিলেন।
তবে প্রায় ১ কোটি ৯০ টাকার রাস্তার কাজের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে এসে বুলু চিক বড়াইকের এমন মন্তব্য এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানের কড়া জবাবে আর যাই হোক পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে বাগরাকোটে তৃণমূলের যে আখেরে কোনও লাভ হচ্ছে না তা মানছেন দুই তরফেরই সাধারণ দলীয় কর্মীরা।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)