নিজস্ব প্রতিবেদন: চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়ক পুজোর দিন একটি গাছের থামে আড়াআড়ি ভাবে বাঁশ বাধা হয় এবং তাতে দড়ি লাগানো হয়। দাড়ির প্রান্তে একটি বড় বড়শি বাঁধা থাকে। ওই বড়শিতে মানুষকে গেঁথে ঘোরানো হয়। মানুষ বলতে যাঁরা গাজন সন্ন্যাসী তাঁদেরই। তাঁরা ধর্মীয় রীতির অনুষঙ্গেই এটি স্বেচ্ছায় করেন। তবে সন্ন্যাসীদের শরীরে অনেক সময়ে বঁড়শি না গেঁথে, দড়ি দিয়েও গোটা তাঁদের পিঠ-কোমর ভালো ভাবে বেঁধে নেওয়া হয়। আর এই পুরো বিষয়টির জন্য যে গাছের থামটি ব্যবহার করা হয়, তাকেই চড়ক গাছ বলে।
চড়ক শেষ হওয়ার পরে গাছটিকে পুনরায় কোনো পুকুর বা দীঘিতে জলের মধ্যে ডুবিয়ে রেখে দেওয়া রীতি। পরের বছর চড়ক মেলার সময় আবার সেটাকে তুলে আনা হয়।
এই চড়কের দিনেই শিবের বিয়ে হয়েছিল বলে মনে করা হয়। ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে চৈত্র মাসে শিব ঠাকুরের আরাধনা, নৃত্যগীতের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়, কৃষ্ণের সঙ্গে শিবের উপাসক বাণরাজার যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে মহাদেবের থেকে অমরত্ব লাভ করার জন্য বাণরাজা নিজের শরীরের রক্ত দিয়ে মহাদেবকে তুষ্ট করেন। শিবের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য ভক্তিমূলক নৃত্যগীতও করেন বলে কথিত। সেই সূত্রেই চড়কের সময়ে শিবপুজোর শুরু বলে মনে করা হয়।
একালে, ১৪৮৫ সালে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামে এক রাজা ছিলেন। তিনিই প্রথম এই চড়ক পুজোর প্রচলন করেন বলে মনে করা হয়। সেই সময় থেকেই শৈব সম্প্রদায়ের মানুষজন এই উৎসব পালন করে আসছেন।
এই পুজোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল দৈহিক যন্ত্রণা। একে এই পুজোর এক বিশেষ অঙ্গ বলে মনে করা হয়। এই পুজোর কিছু বিশেষ প্রথা রয়েছে, যেমন, জ্বলন্ত কয়লার উপর দিয়ে হাঁটা, বঁটি-ছুরি-কাঁটা ইত্যাদির উপর লাফানো বা ঝাঁপানো, আগুনের উপর নাচ, শরীর বাণবিদ্ধ করে চড়কগাছে দোলা ইত্যাদি।
(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)