রণজয় সিংহ: মালদায় ক্লাসে ছাত্রীদের হেনস্থা, কুপ্রস্তাব, শ্লীলতাহানির অভিযোগ স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। থানার দ্বারস্থ ছাত্রীরা। জানা গিয়েছে, স্কুলের ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ স্কুলেরই এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শুধু শ্লীলতাহানি নয়,ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে এমন নির্লজ্জ ঘটনার শিকার ছাত্রীরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানিয়েও কোনও লাভ না হওয়ায় শেষমেষ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিসের দ্বারস্থ ছাত্রীরা। ভূতনি থানায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের। যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি অভিযুক্ত শিক্ষকের।
তবে ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের। আর এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য মানিকচক জুড়ে। গ্রামের উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ঘটনা। অভিযুক্ত স্কুলের বাংলা শিক্ষক। কুকথার মাধ্যমে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা, ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেওয়া, ছাত্রীদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগ বাংলা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তবে এটি একবার দুই দিনের ঘটনা নয় দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্ত শিক্ষক তার ছাত্রীদের সঙ্গে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে আসছেন।
এমনই পরিস্থিতি হয় যে বেশ কিছু ছাত্রী স্কুলে আসতে ভয় পায়। মানসিকভাবে এমনই ভেঙে পড়ে যে শুধু স্কুল নয় টিউশনি যেতেও গররাজি তারা। গভীর চিন্তায় পড়ে যান অভিভাবকরা। কেন স্কুলে যেতে নারাজ ছাত্রীরা তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে এই ঘটনা। ছাত্রীদের মুখ দিয়ে ঘটনা শুনে তাজ্জব অভিভাবকরা। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক দ্বারা দীর্ঘদিন ধরে শ্লীলতাহানির শিকার সেই স্কুলের দ্বাদশ্রেণীর এক ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। সমস্ত বিষয়টি ছাত্রীটি সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানান। তিন দিনের মধ্যে বিষয়টি দেখে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও নয় দিন কেটে গেলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থায় গ্রহণ করেননি প্রধান শিক্ষক।
আরও পড়ুন:Kochi: শরীরচর্চা করতে করতে বুকে হাত! চোখের নিমেষে আচমকাই লুটিয়ে পড়লেন জিমের মাটিতে...
এদিকে প্রধান শিক্ষককে কেন অভিযোগ জানানো হয়েছে তা নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের রোষের মুখে পড়েন প্রতিবাদী ছাত্রীরা। বিভিন্ন রকম হুমকির মুখে পড়তে হয় তাদের। শেষমেষ বেশ কয়েকজন সহপাঠীর সাক্ষীতে পুলিসের দ্বারস্থ হয় প্রতিবাদী দ্বাদশ শ্রেণীর সেই ছাত্রী। ভুতনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। ছাত্রীটির অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আমরা শ্লীলতাহানির শিকার। আমাদের বাংলা শিক্ষক বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের গায়ে হাত দেন। কুকথা বলেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে কুপ্রস্তাব দেন। দিন দিন ছাত্রীদের সঙ্গে স্যারের অসভ্যতা বেড়েই চলেছিল। ঘটনাটি প্রধান শিক্ষককে জানায়। কিন্তু জানিয়েও লাভ হয়নি। পাল্টা অভিযুক্ত শিক্ষক বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দেন। ক্লাসে সবার সামনে আমাকে ছোট করার চেষ্টা করেন। আমি ভূতনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি চাই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি অভিযুক্ত শিক্ষকের। অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, পড়াশোনা না করায় আমি ছাত্র-ছাত্রীদের বকাঝকা, মারধর করে থাকি। তাতেই হয়তো রাগবশত আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, ছাত্রীরা আমাকে অভিযোগ জানিয়েছিল। শুনেছি পুলিসেও অভিযোগ করেছে ছাত্রীরা। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সত্যিই অভিযোগ প্রমাণ হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)