কিরণ মান্না: এগরায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। বিস্ফোরণের ৮ দিনের মাথায় কারখানার মালিক ভানু বাগের স্ত্রী গীতা বাগকে গ্রেফতার করল সিআইডি। গতকাল রামনগর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ তাকে কাঁথি আদালতে তোলা হচ্ছে। বিস্ফোরণে দগ্ধ ভানু বাগের মৃত্যু হয়েছে। এবার তার স্ত্রী, ছেলে ও ভাইপোকে গ্রেফতার করে সিআইডি জানার চেষ্টা করবে গত ১৬ মে এগারার খাদিকুল গ্রামে ঠিক কী হয়েছিল।
আরও পড়ুন-বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ! রাস্তায় ছিন্নভিন্ন দেহ, তীব্র আওয়াজে কেঁপে উঠল গ্রাম
গত ১৯ মে কটকের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ভানু বাগের। বিস্ফোরণের পরই তিনি ওড়িশায় পালিয়ে যান ভানু। ভর্তি হন কটকের একটি হাসপাতালে। বিস্ফোরণের পরে তার শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে যায়। কটকের হাসপাতালে তাকে পৌঁছে দেন তার ছেলে এবং ভাইপো। বিস্ফোরণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিনি নিজে। মুখ, হাত, পা পুড়ে যায় তাঁর। বিস্ফোরণের রাতেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি। কটকের হাসপাতাল কর্মী, চিকিৎসক, নার্স, অ্যাটেন্ডেন্টদের দীর্ঘক্ষন জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। রাতে ভানুকেও জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করে সিআইডি। ঘটনায় মূল যে অভিযুক্ত তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ফলত ভানু বাগের মৃত্যুতে তদন্তকারী অফিসারদের একটু সমস্যা হবে তা মনে করা হচ্ছে। কীভাবে সম্পূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল অথবা যা মনে করা হচ্ছে যে বিস্ফোরণ হয়েছে বাজি পরীক্ষা করার সময় এই সব তথ্য ভানু বাগের কাছ থেকে যাচাই করার প্রক্রিয়া ব্যহত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এখন ভানুর স্ত্রী ধরা পড়ার সিআইডির কাজ খানিকটা সহজ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে দুপুর একটা নাগাদ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এগরার খাদিকুল গ্রাম। বাজি কারখানায় প্রবল বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রামে পুলিস ঢোকার চেষ্টা করতেই তাদের ঘিরে ধরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠে। বাজি তৈরির বিপুল মশলা মজুত থাকায় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের জেরে বাজি কারখানাটি সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে যায়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে গোটা বাড়ির ছাদ উড়ে যায়। শুধু বাড়ির কাঠামো সেখানে পড়ে রয়েছে। এখনওপর্যন্ত ওই বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যু হয়। জানা যাচ্ছে ওড়িশা থেকে ৩ জন এসেছিল বাজি কিনতে। তাদের বাজি পরীক্ষা করে দেখাতে গিয়েই ভয়ংকর কাণ্ড ঘটে যায়।