নিজস্ব প্রতিবেদন: দশ বছরের বিয়ে। ঘরে রয়েছে স্ত্রী ও দুই সন্তান। কিন্তু অন্য এক মহিলার সঙ্গে 'সম্পর্ক' স্বামীর। স্ত্রীর উপর চালাত চরম শারীরিক এবং মানসিক 'অত্যাচার'। এরপরও সন্তানদের মুখ চেয়ে শ্বশুরবাড়ির দরজায় হাজির ঘরছাড়া মহিলা। অভুক্ত অবস্থায় গত কয়েকদিন ধরে শ্বশুর বাড়ির উঠোনেই ধর্না দিয়েছেন তিনি। তবে পলাতক অভিযুক্ত স্বামী এবং শাশুড়ি।
ঘটনাটি ঘটেছে, মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের হুসেনপুর গ্রামে। রবিবার সন্ধে থেকে শ্বশুরবাড়ির উঠোনে ধর্নায় বসেছেন মহিলা। রাত গড়িয়ে সকাল,সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও কেউ তাঁর খোঁজ নেয়নি। অভুক্ত অবস্থায় ঠায় বসে রয়েছেন তিনি। শ্বশুর বাড়িতে ঢুকতে না দিলে সেখানেই আত্মহত্যা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গৃহবধূ। অন্যদিকে রবিবার সন্ধে থেকেই পলাতক অভিযুক্ত স্বামী এবং শাশুড়ি। এই ঘটনায় হুসেনপুর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
গৃহবধূর জানান, প্রায় দশ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কিছুদিন পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল। তাদের দুই সন্তানও রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, কয়েকদিন পর থেকে স্বামী ও শাশুড়ি মোটা অঙ্কের যৌতুক চাইতে থাকে। যৌতুক না দিলে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতে শুরু করে। দুই সন্তানের মুখ চেয়ে অত্যাচার সহ্য করেও সংসার করে যাচ্ছিলেন মহিলা।
এরপর আরও বাজে দিকে মোড় নেয় পরিস্থিতি। মহিলার অভিযোগ, রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্ডীপুর গ্রামের এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায় তাঁর স্বামী। সবসময় মোবাইলে ব্যস্ত থাকে সে। প্রতিবাদ করলেই মারধর করত। এই নিয়ে গ্রামে বেশ কয়েকবার সালিশি সভাও বসেছে। দ্বিতীয় বিয়ে করবে বলে দু'মাস আগে তাঁকে জোর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় স্বামী। তারপর থেকে তাকে আর বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
রবিবার সকালেও গ্রামে সালিশি সভা বসার কথা ছিল। কিন্তু অভিযুক্ত স্বামী ও শ্বাশুড়ী সালিশি সভায় উপস্থিত না হয়ে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। গৃহবধূর মা'র অভিযোগ,বিয়ের সময় সমস্ত যৌতুক মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে আরও যৌতুক চায় জামাই। এরজন্য মেয়েকে মারধর করে সে। এরপর চন্ডীপুর গ্রামের এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সে। এরপর মেয়েকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।
কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অলক পোদ্দার অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত ছেলেটি চরিত্রহীন। মোটা অঙ্কের যৌতুকের জন্য স্ত্রী'কে মারধর করত। এই নিয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসন বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছে। ফোন মারফত অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন: Khanakul Accident: অত্যন্ত মর্মান্তিক! একজনকে বাঁচাতে গিয়ে 'বেঘোরে' মৃত্যু ২ জনের
আরও পড়ুন: Summer 2022 Death: হাঁসফাঁস করতে করতে মৃত্যু আশাকর্মীর, রাজ্যে গরমের প্রথম বলি?