বিধান সরকার: হুগলির গুপ্তিপাড়া বড়বাজার জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়িতে তখন সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে পুলিশ আর জনতা।অপর দিকে দরজা ভেঙে লুঠপাট চলছে মন্দিরে।পুলিশ দেখেও চুপ।এই দৃশ্য দেখা যায় উল্টো রথের আগের দিন গুপ্তিপাড়াতে।শতাধিক স্থানীয় মানুষ গায়ে তেল মেখে জগন্নাথের ভান্ডার লুঠ করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান।যতক্ষণ না ভোগের মালসা হস্তগত করছেন লড়াই ততক্ষণ চলে কেউ একটা কেউ বা একাধিক ভোগের মালসা নিয়ে আনন্দে পা বাড়ান বাড়ির পথে।ভোগের প্রসাদ পান উপস্থিত ভক্তরাও।
উল্টো রথের আগে শতাব্দী প্রাচীন এই ভান্ডার লুঠের রীতি চালু রয়েছে এখানে।জগন্নাথ দেবের গুপ্তিপাড়ার ২৮৬ বছরের প্রাচীন রথের একটি বৈশিষ্ট্য ভান্ডার লুঠ। রথের দিন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা রথে চেপে গুপ্তিপাড়া বড়বাজারে মাসির বাড়ী আসেন। মাসির বাড়ী থাকাকালীন উল্টোরথের আগের দিন এই ভান্ডার লুঠের অনুষ্ঠানে মেতে ওঠে গুপ্তিপাড়া তো বটেই তার সাথে পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষ।
পৌরাণিক কাহিনী থেকে জানাযায় , দ্বিতীয়ায় রথে চেপে মাসির বাড়ি আসেন প্রভু জগন্নাথ।কয়েকদিন কেটে গেলেও গৃহে না ফেরায় জগন্নাথের স্ত্রী লক্ষ্মী দেবী চঞ্চল হয়ে পড়েন। মনে দুশ্চিন্তাও আসে।তিনি জগন্নাথকে ফেরাতে জগন্নাথের মাসির বাড়ি আসেন পঞ্চমীর দিন।সেখানে তার ভুল ভাঙে।দেখেন মাসির বাড়িরতে ভালোমন্দ খাবার খেতে মত্ত জগন্নাথ বাড়ি ফেরা ভুলেছেন। প্রভুকে দেখে বহু অনুনয়-বিনয় করলেও মাসির বাড়ি ছেড়ে তিনি যেতে রাজি হননি। তখন দেবী লক্ষী সাথে করে আনা সরষে পোড়া জগন্নাথের গায়ে ছোরেন। কিন্তু তিনি বিফল হয়ে ফিরে যান। উল্টো রথের আগের দিন জমিদার বৃন্দাবন চন্দ্র ও কৃষ্ণচন্দ্র তারা দুজনেই সেই কথা জানতে পারেন। পরে তারা স্বস্ত্রীক লেঠেল নিয়ে গুপ্তিপাড়া বড়বাজারে অবস্থিত মাসির বাড়িতে লুটপাট চালান।খাবার না পেয়ে যাতে বাধ্য হয়ে প্রভু মাসির বাড়ির ত্যাগ করেন। সেই থেকেই চলে আসছে গুপ্তিপাড়ায় ভান্ডার লুট প্রথা।
আরও পড়ুন- Breaking News LIVE Update: দীঘায় উলটো রথের মহোত্সব! ১০০০০ ভক্তের জন্য অন্নভোগের আয়োজন...
আর এই ভান্ডার লুট দেখতে হাজির ছিলেন হুগলি গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি ক্রাইম অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র। তিনি বলেন, বহু প্রাচীনকাল থেকেই এই লুট চলে আসছে। নিরাপত্তার কোন খামতি রাখা হয়নি। ড্রোন ক্যামেরা ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিস মোতার রাখা হয়েছিল।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)