Home> রাজ্য
Advertisement

Mother throw her Son: সন্তানের খিদের কান্না সহ্য হয়নি! দেড় বছরের খুদেকে মা ছুঁড়ে ফেলল নদীতে...

তবে পুলিস সূত্রে আরও জানা যায় স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনুমান। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও এদিন ঘটনা প্রসঙ্গে ময়নাগুড়ির বিডিও প্রসেনজিৎ কুন্ডু টেলিফোনে জানান, বিডিও অফিস থেকে টিম পাঠানো হয়েছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Mother throw her Son: সন্তানের খিদের কান্না সহ্য হয়নি! দেড় বছরের খুদেকে মা ছুঁড়ে ফেলল নদীতে...

প্রদ্যুত্‍ দাস: ঘরে নেই খাবার! অভাবের তাড়নায়, খিদের জ্বালায় সকাল থেকেই কান্না জুড়ে দিয়েছিল কোলের সন্তান। উপায় না পেয়ে দেড় বছরের পুত্র সন্তানকে ভরা তিস্তায় ফেলে দিলেন মা। সে সময় নদীর পারে উপস্থিত দুই কিশোরী ও এক মহিলা মিলে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের তিস্তা সেতু সংলগ্ন মরিচবাড়ি এলাকায়৷ ঘটনায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনাস্থলে ময়নাগুড়ি থানার পুলিস পৌঁছে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

আরও পড়ুন, Barasat: রেলগেটে পথ আগলে দাঁড়িয়ে জোর করে ছাত্রীর গো*পনা*ঙ্গে হাত! কসবাকাণ্ডের আবহেই ভয়ংকর... 

ওই মহিলার নাম সীমা বাওয়ালি। তার স্বামীর নাম বিপুল বাওয়ালি। বিপুল ঠিকা কাঠ মিস্ত্রির কাজ করেন। তাদের তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান ও দেড় বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক ধরে কোনও কাজ ছিল না বিপুলের। ঘরে খাবারের অভাব। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই খিদের জ্বালায় কান্নাকাটি করছিল ছোট্ট সন্তানটি ৷ এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। এরপর বিপুল কাজের খোঁজে বাড়ির বাইরে যান।

তখন সীমা তার পুত্র সন্তানকে নিয়ে বাড়ি লাগোয়া তিস্তা নদীতে গিয়ে শিশুটিকে নদীতে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। এমনিতেই ভরা বর্ষায় তিস্তা এখন ফুলে ফেঁপে রয়েছে। সীমার এই কাণ্ড দেখে নদীর পারে উপস্থিত দুই কিশোরী ও এক মহিলা এই তিনজন মিলে কোনওক্রমে নদী থেকে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে চিৎকার করে আশেপাশের লোকজন ডাকতে শুরু করে। সে সময় ফের সীমা ওই কিশোরীদের হাত থেকে বাচ্চাটিকে নিয়ে নদীতে ফেলার চেষ্টা করে। তখন এলাকার মহিলারা এসে  সীমার ওপর চড়াও হন।

পাশাপাশি মহিলাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন বিপুল। এরপর ময়নাগুড়ি থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কাঁদতে কাঁদতে অভাবী মা  সীমা বলেন, ঘরে খাবারের অভাব। বাচ্চার খাওয়ার দুধ নেই। সকাল থেকেই বাচ্চা খুব কান্নাকাটি করছে। সাহায্য করার মত কেউ ছিল না। বাচ্চাকে ঠিক মত পালন করতে পারছিলাম না সে কারনে নদীতে ফেলে দিতে চেয়েছিলাম। তবে সীমার দাবি বাচ্চাকে সে নদীতে ফেলেনি, ফেলার চেষ্টা করেছিলেন।

বিপুলের বক্তব্য, কাজের খোঁজে বাইরে বেরোনোর কিছু সময় বাদে খবর পাই আমার স্ত্রী ছোট পুত্র সন্তানকে নদীতে ফেলেছে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে ছুটে আসি ৷ প্রতিদিন কাজ জোটে না। কিছুদিন আগে কাজ করে যা পয়সা পেয়েছিলাম সেই টাকা দিয়ে চাল কিনে এনেছিলাম। সেই চাল শেষ হয়ে গিয়েছে। স্ত্রী কেন এমন কাণ্ড ঘটতে চাইল বুঝতে পারছি না।

এদিকে ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। যে কিশোরীরা ওই শিশুটিকে নদী থেকে উদ্ধার করে সেই দুই কিশোরী বলেন, স্নানের জন্য নদীর সামনে গিয়ে দেখতে পাই ওই মহিলা বাচ্চাটিকে নদীতে ফেলে চলে যাচ্ছে। তখনই আমরা নদী থেকে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করি। ওই মহিলা ফের এগিয়ে এসে বাচ্চাটিকে আমাদের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে নদীতে ফেলার চেষ্টা করলে আমরা চিৎকার করে সবাইকে ডাকি।

বিপুলের দাদা পলাশ বাওয়ালি বলেন, ভাইয়ের সঙ্গে ভাই বউয়ের অশান্তি লেগেছিল, কিন্তু এমন ঘটনা ঘটাতে যাবে তা ধারনা ছিল না। ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন সীমার বাপের বাড়ির লোকেরাও। তারাও স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েন। সীমার মা স্বর মন্ডলের বক্তব্য, মেয়ের পরিবারে অশান্তি ছিল। আর্থিক সমস্যাও কথা শুনেছি। বড় ধরনের ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া গিয়েছে।

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা শিউলি কীর্ত্তনিয়ার বক্তব্য, ঘটনার পর এলাকার বাসিন্দারা সাময়িক উত্তেজিত হয়ে পরেন। পুলিস আসার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। খবর পাওয়া মাত্রই ময়নাগুড়ি থানার পুলিস ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেন। পুলিসের পক্ষ থেকে পরিবারের উদ্দেশ্যে বলা হয় যাতে পরবর্তিতে কোনও এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্কও থাকতে।

আরও পড়ুন, Bengal Weather Update: বাংলাকে ক্রমশ গিলে নিচ্ছে শক্তিশালী নিম্নচাপের সঘন মেঘপুঞ্জ? না কি 'রেইনি ডে'র মাধুর্যযাপন...

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

Read More