অর্ণবাংশু নিয়োগী: প্রাক্তন বিচারপতি ও বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ভরা আদালতে বেনজির আক্রমণ করলেন আইনজীবি ও শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বর্তমানে গুরুতর পেটের অসুখ নিয়ে দিল্লির এইমস-এ ভরতি রয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনের আগে আইনজীবির পদ থেকে পদত্যাগ করেন অভিজিত্ বাবু। আইনজীবি থাকার সময় তিনি ২০১৬ সালের নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকতার প্যানেল বাতিল করেছিলেন।
তার পরে বয়ে গেছে অনেক জল। সুপ্রিম কোর্টের মামলা গড়ালে সেখানেও এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হয়। নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকতার চাকরি হারিয়ে এবার আপার প্রাইমারিতে নিয়োগে আশায় চাকরিহারা। 'শূন্য়পদ থাকলে আগের সুযোগ কেন দেওয়া হবে না'? স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে এই রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: Kaliganj By Election: বিজয় মিছিলে প্রাণহানি! বোমার আঘাতে মৃত্যু চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীর...
আর এই মামলায় রায় দিয়েছিলেন একসময় প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর সেই রায়কে নিয়েই কুত্সিত আক্রমণ করলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ আপার প্রাইমারির চাকরিহারা শিক্ষকের করা মামলায় আইনজীবি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, মধ্যমেধার কোনও বিচারপতি আইনের খুঁটিনাটি বুঝতে পারেন না। তারা বিচারপতির চেয়ারের যোগ্যও নন। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিয়ে থাকি, বিচারপতি গাঙ্গুলি কেন পড়াশোনা করেননি? তিনি তো আইপ্যাড পান। আইনের কাছে অজানা প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন বিচারপতি গাঙ্গুলি।'
চাকরি বাতিলের নির্দেশের জন্য পর্ষদের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের একাংশ।
এই মামলায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করেন- 'মামলা গ্রহণযোগ্যই নয়। কেন একথা সিঙ্গেল বেঞ্চের সামনে বলেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ? রায়ের ফলে যারা প্রভাবিত হবে তাদের ছাড়া মামলা হয়? কেন একথা সিঙ্গেল বেঞ্চের সামনে বলেনি পর্ষদ? সিঙ্গেল বেঞ্চে আমরা পর্ষদের তরফে কোনও সহযোগিতা পাইনি, কিন্তু মামলাকারীরা বিচারপতির আশীর্বাদ পেয়েছ। সিঙ্গেল বেঞ্চে কেন আর কীসের জন্য চুপ ছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ?'
শ্রীরামপুরের সাংসদ আরও জানান- 'আমাদের কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ আছে যে প্রভাবিত ব্যক্তিদের যুক্ত না করে মামলা হয় না। ২০১৬ সালের পর থেকে তো একাধিক বিচারপতি শিক্ষা সংক্রান্ত মামলার বিচার করতেন। মামলাকারীরা সেখানে কেন যাননি? সুবিধা হবে না বলে ? যেখানে সুবিধা হবে সেখানে যাবেন বলে?'
'তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী কিছু ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। আমরা পাল্টা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারব না কেন? তিনি বারবার বলেছেন যে আইনের খুঁটিনাটির মধ্যে তিনি ঢুকবেন না। এদেশের মহান বিচারপতিরা সবসময় আইনের খুঁটিনাটির ওপর জোর দিয়ে এসেছেন এবং তাঁরা এটা ভালো বোঝেন।'
'আমাদের বিরুদ্ধে কি আদৌ কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে? সিবিআই কি আমাদের কাউকে গ্রেফতার করেছে? আমরা কাউকে টাকা দিয়েছি সেটা কি প্রমাণিত হয়েছে? - সওয়াল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এই সওয়াল শুনে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বেশ রেগে যান এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ করে বলেন- 'এসব কথা বলবেন না। কোনও বিচারপতি যদি খুঁটিনাটি বুঝতে না পারেন তাহলে আপনি তাকে দোষ দিতে পারেন না।'
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)