জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'লাড্ডু গোপাল-ই বাঁচিয়েছে আমায়'। অভিশপ্ত করমণ্ডলে টিকিট ছিল তাঁরও। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই টিকিট বাতিল করে দেন। আর যাত্রা করেননি। দুর্ঘটনার ৫ দিন পর প্রথম আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রী হয়ে সেই কথা-ই মনে করে লাড্ডু গোপালকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন হাওড়ার বাসিন্দা লক্ষ্মী দাস সরকার।
২ তারিখ, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে বাহানগা বাজার স্টেশনে ভয়ংকর দুর্ঘটনার মুখে পড়ে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। মালগাড়িকে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয়ে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। আবার লাইনচ্যুত করমণ্ডলের কামরার ধাক্কা লেগে বেলাইন হয়ে যায় ডাউন যশবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেসের শেষ দুটি কামরা। ৩ ট্রেনের এই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৮৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত ১২০০-রও বেশি। এই ২ তারিখের ট্রেনেই টিকিট কাটা ছিল লক্ষ্মী দাস সরকারের। ২ তারিখের কলমণ্ডল এক্সপ্রেসটি-ই তিনি ধরবেন বলে ঠিক ছিল। কিন্তু মেয়ে ছুটি না পাওয়ায় শেষমুহূর্তে তিনি তাঁর টিকিট বাতিল করে দেন। তাঁর যাত্রা বাতিল করে দেন।
সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার ৫ দিন পর বুধবার. ৭ তারিখ, ফের আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চাকা গড়ায়। বুধবার সেই ট্রেনে ওঠেন লক্ষ্মী দাস সরকার। সঙ্গে নিয়ে ওঠেন পিতলের একটি ছোট্ট গোপাল মূর্তি। ২ তারিখ তাঁর টিকিট বাতিল করে দেওয়া, সেদিন যাত্রা না করা, হাড়হিম করা ভয়াবহ দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে এসবের জন্য 'লাড্ডু গোপাল'কেই বার বার ধন্যবাদ দিচ্ছেন লক্ষ্মী দাস সরকার। মেয়ের সঙ্গে দেখা করতেই চেন্নাই যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। চেন্নাইয়ে একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করেন তাঁর মেয়ে। এখনও ভাবলে শিউরে উঠছেন, সেদিন ২ তারিখ ট্রেনে উঠলে কী হত!
মেয়ের কাছে যাওয়ার জন্যই আবার ৭ তারিখের করমণ্ডলে চড়ে বসেন তিনি। তবে এবার তিনি একা আসেননি। সঙ্গে এনেছেন তাঁর 'লাড্ডু গোপাল'কে। মনে খানিক ভয় রয়েছে। খানিক শঙ্কা রয়েছে। তবে তা প্রকাশ করতে নারাজ তিনি। কারণ, 'লাড্ডু গোপাল'-এর উপর ভরসা রয়েছে তাঁর। লক্ষ্মী দাস সরকারের কথায়, 'লাড্ডু গোপাল আমার সঙ্গে আছে। তাই আমি কিছুতে ভয় পাচ্ছি না। ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। লাড্ডু গোপাল আমার সঙ্গে যাচ্ছে। তিনি যা ভাববেন, তা-ই হবে। এসব বাদে আমার কোনও ভয় নেই।'
আরও পড়ুন, ক্ষতিপূরণের মোটা টাকা হাতাতে করমণ্ডলের দুর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর মিথ্যে গল্প ফাঁদে স্ত্রী! তারপর...