নিজস্ব প্রতিবেদন: চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণের আগে রাজ্যে আজ প্রচারে বিজেপি ও তৃণমূলের হেভিওয়েটরা। উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে প্রচার করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গে আজ তাঁর দুটি সভা রয়েছে। অন্যদিকে, সিঙ্গুরে রোড শো করছেন অমিত শাহ।
উদ্বাস্তুদের যাদের কলোনি আছে সব কলোনি রেকগনাইজ করে দিয়েছি। কোনও কলোনি বেআইনি নয়। আমরা মন্ত্রিসভায় মিটিং করে ঠিক করে দিয়েছি। আপনারা জায়গাগুলো ধীরে ধীরে পাবেন। ডিটেনশন ক্যাম্পে ওদের যেতে হবে। আপনারা যাবেন না।
কোভিডের সময়, আমফানের সময় তোমরা আসোনি। এখন ভোটের সময় একলাখ নেতা নিয়ে এসেছো! আমাকে সবসম ধমকাতে চায়। ওরা জানে না আমি বাংলার মাটিতে জন্মেছি। আমাকে চমকালে আমি ধমকাই। এখন আবার ভ্য়াংচাচ্ছে। খেলা হবে স্লোগানই ওদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। ওদের জিজ্ঞাসা করুন, কী করেছেন এতদিন। নোটবন্দি করেছেন, ব্যাঙ্ক বন্ধ করেছেন, যার তার বিরুদ্ধে সিবিআই লাগিয়ে দিচ্ছেন। আমার টাকা আমাকে দিচ্ছ না। বলছে মোদীর পকেট থেকে দিচ্ছে।
রবীন্দ্রনাথকে ভুলিয়ে দিচ্ছে। বলে কি , রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান শান্তি নিকেতন। শুনছি বিশ্বভারতীটাও তুলে দেবে। জায়গার নাম বদলে দিচ্ছে। একদিন দেখবেন, আপনার নামও বদলে দেবে। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অমর্ত্য সেনকে তাড়িয়ে দিল।
ওরা বলে বাংলাকে সোনার বাংলা গড়ব। ওদের বলি তোমরা ঢোকলা খাও। বাংলা চেও না। মাকে দেব না।
গোলগাল ভাই আছেন না একজন? খুব লাভলি। খুব সুইট। উনি অবশ্যা আমাকে পছন্দ করেন না। কল পর্যন্ত ৯১ আসনে ভোটে হয়েছে। আজ বলেছে, আমরা তো ৬৮-৭০ আসন পাব। আমি বলি আগে কী বলেছিলেন, একটু মনে করে দেখুন। ছত্তীসগঢ়ের ভোটে সময় বলেছিলেন বিজেপি ৬৫ আসন পাবে। পেয়েছিল ১৫ আসন। ঝাড়খ্ডে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবেন বলেছিলেন। ৮১ আসনের মধ্যে ২৫টা পেয়েছে। মহারাষ্ট্রে দুই তৃতীয়াংশ আসন পাব বলেছিলেন। পেয়েছেন এক তৃতীয়াংশ আসন। বাংলায়এই ৯১ আসনের মধ্যে আগে ১০-১২টা পেয়ে দেখান। ম্যাচ ড্র-ও হবে না। ভাবছে কর্মীদের দম দিতে হবে। তাই এসব বলেছে। মোদীজি, আপনাদের যদি এত ক্ষমতা থাকতো তাহলে কি বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে লোক এনে সভা করতে হতো না।
হায় হায় একি হল, আসানসোল থেকে পালিয়ে এল। টালিগঞ্জের সভা থেকে বাবুল সুপ্রিয়কে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন এমএলএ ভোটে দাঁড়াচ্ছে। এরপর পঞ্চায়েতে দাঁড়াবে। তারপর ক্লাবের ভোটে দাঁড়াবে। এই তো ব্যাপার। বিজেপিকে প্রশ্ন করছি, টালিগঞ্জে তোমাদের আর কেউ ছিল না?
আমরা চাই শান্তিপূর্ণ ভোট। কিন্তু ভোট এলেই কিছু পুলিস বিজেপি হয়ে যায়। সবাই নয়। পুলিসের নেতারা এ কাজ করে। গতকাল আরামবাগে আমার দেখে নিয়েছি। আরামবাগের ওসির রোল দেখেছি। সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে হবে। সাধারণ মানুষকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। সিআরপিএফ যদি ভোট দিতে বাধা দেয় তাহলে একদল মহিলা তাদের ঘিরে রাখবেন। অন্যরা ভোট দেবেন। আমি সিআরপিএফকে শ্রদ্ধা করি। ওরা রিয়েল জওয়ান। কিন্তু দে আর ডুইং নুইসেন্স। আমি বিজেপি সিআরপিএফকে রেসপেক্ট করি না। এরা মহিলাদের মারছে। মানুষকে হ্য়ারাস করছে। সুকমাতে এত জওয়ানদের মেরেছে। কী করছে সরকার ওদের জন্য। এখন বলছে যাও ভোট করিয়ে এসো। বিজেপিকে ভোট দিতে বলছে। মহিলাদের ভোট দিতে নিষেধ করছে। পুলিসকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে হবে।
আমাকে হারানোর জন্য বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসেছে। গোটা অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এরা আবার উন্নয়নের কথা বলে।
নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন, দেখবেন কোনও ভোটারকে যেন মারধর করা না হয়। অমিত শাহের নির্দেশে পুলিস অত্যাচার করে বেড়চ্ছে। বাংলা দখল করবে? একটা চোরেদের পার্টি! বাংলা শাসন করবে?
ধর্ম নিয়ে ভাগাভাগি করে এরা। কখনও এরা বাঙালির সঙ্গে রাজবংশীদের লড়াই লাগিয়ে দেয়। কোনও ভাগাভাগি করবেন না। আমিও ব্রাহ্মণ ঘরের মেয়ে। আগে এসব কথা বলতাম না। এখন বলতে বাধ্য হচ্ছি। আমি সবার ধর্ম মানি। আমার খাবার তৈরি করে এক তপসিলি ঘরের মেয়ে। বিজেপি এটা চায় না।
বিজেপি ছদ্মবেশী শয়তান। ভোটের সময়ে মন্দিরে মাথা ঠেকায়। আর পেছনে সব করি। ওরা টাকা দিচ্ছে ভোট দেওয়ার জন্য। ভোট দিন তৃণমূলে। টাকাটা নিয়ে নিন। এরা বাংলা জানে না। বাংলির সংস্কৃতি জানে না। অসম থেকে গুন্ডা এনে যদি ভয় দেখায় তাহলে কি বিজেপিকে ভোট দেবেন? অসমের লোকদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখেছে। জিতলে তো ওরা আপনাদেরও একই জিনিস করবে। তাই ডিটেনশন ক্যম্পে যদি না থাকতে চান, বিজেপিকে ভোট দেবেন না।
রাজবংশী ভাষা, কামতাপুরি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি। কিন্তু আপনারা বলুন বিনা পসায় চাল পান? স্বাস্থ্যসাথী পেয়েচেন। যদি না পান তাহলে দুয়ারে সরকার-এ যাবেন। সব পেয়ে যাবেন। একশো দিনের কাজ দুশো দিনও হতে পারে।
আমি একা জিতে সরকার গড়তে পারব না। আমাদের দুশো আসন পেতে হবে। তা না হলে বিজেপি টাকা খাইয়ে কোনও গদ্দারকে কেনে নেবে।
রেশন দোকানে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের সরকার হলে বাড়িতে বাড়িতে রেশন পৌছে দেব। ভোট জিতলে হাজার টাকা হাত খরচা পাবেন। পড়ুয়াদের জন্য ১০ লাখ টাকা ক্রেডিট লোন করে দেব।
সরকারি বেসরকারি ক্ষেত্র ৫ লাখ চাকরি হবে। দেশে ২ কোটি বেকার বেড়েছে। বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকার কমেছে।
আমরা রাজ্য পুলিসে নারায়ণী ব্যাটালিয়ন করে দিয়েছি। তাদের সদর দফতর কোচবিহারে। এবার ৩ হাজার লোকের চাকরি হবে পুলিসে। বলে উদ্বাস্তুদের জমি দেব। ছিট মহল কে করে দিয়েছিল? ৬০ বছর চ্যাংড়াবাঁধা রেল হয়নি। আমি করে দিয়েছি। পদতিক, উত্তরবঙ্গ একপ্রেস আমার করে দেওয়া। কামাক্ষা এক্সপ্রেস, শতাব্দী আমার করে দেওয়া। এখানে বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের বিরুদ্ধে বিজেপির যিনি দাঁড়িয়েছেন তিনি মার্ডার কেসে জেলে ছিলেন। এখানকার একজন সাংসদ এবার এমএলএ ভোট দাঁড়িয়েছে। এবার কাউন্সিলর ভোট দাঁড়াবে। তারপর ক্লাব ভোটে লড়াই করবে।
তিনটে দফায় ভোট হয়ে গিয়েছে। তাতে আমরা জিতছি। মনে রাখবেন। বিজেপি আমাদের ধারে কাছে নেই।
কাল এত অত্য়াচার করেছে কি বলব। তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মাণ্ডলকে বাঁশ দিয়ে মেরেছে। তার সিকিউরিটিকে বাঁশ দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। গোঘাটে আমার বুথ প্রেসিডেন্টেকে পর্যন্ত খুন করেছে। খানাকুলে আমাদের প্রার্থী নাজবুলকে পিটিয়েছে। আর মেয়েরা যাতে ভোট দিতে না পারে তার জন্য সেন্ট্রাল ফোর্স এসে দাঁড়িয়েছে গ্রামে গ্রামে। বলেছে ভোট দেওয়া যাবে না। কী মা-বোনেরা? আপনাদের কেউ যদি বলে ভোট দেওয়া যাবে না শুনবেন? সাহস আছে? মনে রাখবেন শান্ত হওয়া ভালো। কেউ যদি দুষ্টুমি করে তাকেও থাপ্পড় দিতে হয়। ভোটটা আপনাদের দিতে হবে। বিজেপি মা-বোনেদের ভয় পাচ্ছে। এরা ক্ষমতায় এলে কোনওদিন হয়তো এআরসি করবে। বলবে তুমি বাদ ডিটেনশন ক্যাম্পে চলে যাও। আমি করতে দেব না। বাংলায় সব মানুষ ভারতের নাগরিক।
মেচেদা থেকে কামারপুকুর, নতুনগ্রাম, মোড়গ্রাম হয়ে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত রাস্তা হবে। যোগাযোগ বাড়বে।
অসমে এনপিআর, এনআরসির নাম করে ১৪ লাখ বাঙালিকে ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দিয়েছে। বলুন তো তারা আপনাদের ভাইবোন নয়? আপনাদের কষ্ট হয় না?
বিজেপি বলছে নারায়ণী ব্য়াটালিয়ন করে দেব। করেছে? করেনি ওরা। কালও কোচবিহারে ওরা বলেছে ভোটের পর সব করে দেব। করবে কী? সব মিথ্যে কথা। আরটিআই করে জানা গিয়েছে নারায়ণী সেনা তৈরি করার কোনও প্রস্তাব কেন্দ্রের নেই।
রাজবংশী কালচারাল ডেভলপমেন্ট বোর্ড ১১০০ রাজবংশী মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে। ভাওয়াইয়া সেতু, চ্যাংড়াবাঁধা রেল লাইন, জয়ী সেতু, কোচবিহার নতুন রেল স্টেশন তৈরি হয়েছে। যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম তখন এসব অনুমোদন করে দিয়েছিলাম।
কোচবিহার উত্তরে বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে দাঁড়া করানো হয়েছে। ওকে আমরা পার্টি থেকে বলেছি এখানে দাঁড়াতে হবে। রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে প্রার্থী করা হয়েছে। ও আমার সঙ্গে ঝগড়া করে। কিন্তু কোচবিহারের জন্য লড়াই করে। রবি পুরনো ছেলে। দক্ষিণ রয়েছে অভিজিত। ওর রাফ অ্যান্ড টাফ। ওকে বন্যাতেও পাবেন খরাতেও পাবেন।
Thank you