জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটা ব্যুরো: খেজুরিতে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে বিরোধী থেকে শুরু করে রাজ্যে গোলমাল সৃষ্টিকারীদের নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের সভায় মমতা বলেন, আগে নিয়ম ছিল যাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকবে তারাই লক্ষ্মীর ভান্ডার পাবেন। এখন আপনার স্বাস্থ্য়সাথী কার্ড না থাকলেও লক্ষ্মীর ভান্ডরের জন্য আবেদন করবেন। ষাট বছর বয়সের পর মাসে ১ হাজার টাকা পাবেন। বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদন করতে হবে না। গ্যারান্টি মানি না দিয়েও ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। আপনাদের বাড়ির সামনেই দুয়ারে সরকারের বুথ হবে। সেখান থেকে সব সুয়োগ পাবেন।
আরও পড়ুন-মূর্তির ভিতরে মৃত্যু! ক্যাফেতে বিস্ফোরণে নিহত ওয়ারব্লগার, আহত বহু...
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কছা টেনে মমতা বলেন, সূর্যদয়ের নামে টানা ১০ দিন কাউকে বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হয়নি। ১৪ মার্চ যখন গুলি চলেছিল সেইসময় কাউকে খেজুরিতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গুলি চালানার পর আমি ছুটে এসেছিলাম। ভুলে যাবেন না দিনগুলো। চণ্ডীপুরে আমার গাড়ি আটকে পেট্রোল বোমা মারার চেষ্টা হয়েছিল। আমার উপরে অনেক অত্য়াচার হয়েছে। তার পরেও বলছি আমার সংগ্রামকে কেউ রুখতে পারবে না। আমাদের কাছে থেকে সবকিছু খেয়ে গিয়ে এখন বড়বড় কথা বলছে। তাদের সম্পর্কে একটি কথাও বলছি না।
বিরোধীদের নিশানা করে মমতা বলেন, লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে চলে যাওয়ার মানুষ আমি নই। সিপিএমের আমলে দেখেছি গুন্ডাবাজি, মানুষের জীবন নিয়ে খেলা, পুকুরে বিষ মিশিয়ে দেওয়া, হাত কেটে দেওয়া, পা কেটে দেওয়া, নরমুন্ড নিয়ে খেলা। আর বিজেপির আমলে দেখছি দাঙ্গাবাজি। রোজার মাস চলছে, অন্ন্পূর্ণা পুজো চলছে। রামনবমীর মিছিল ৫ দিন হবে কেন? রামনবমী যেদিন হয় সেদিন মিছিল কর। আমাদের কারও আপত্তি নেই। কিন্তু বন্দুক-বোমা নিয়ে মিছিল করবে না। অনুমতি না দেওয়ার পরও মিছিল করছে। এত রাস্তা থাকা সত্বেও ঢুকে যাচ্ছে সংখ্যালঘু অঞ্চলে। সেখানে গিয়ে ফলের গাড়িগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। বন্দুক নিয়ে নাচ করা হচ্ছে। কালকে রিষড়াতেও মিছিল করার পর করেছে।
প্রশাসনকে সতর্ক করে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, আগামী ৬ তারিখের কথা মনে রাখবেন। বজরংবলীকে আমরা সবাই সম্মান করি। কিন্তু ওরা যেন কোনও ছক কষতে না পারে তা মাথার রাখবেন। গোটা ভারতে এ জিনিস করছে। মেদিনীপুরে আপনারা তো কোনওদিন দাঙ্গাবাজের জন্ম দেননি। আপনারা তো স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্ম দিয়েছেন। ক্ষুদিরামের জন্ম দিয়েছেন। ধর্ম যার যার নিজের। উত্সব সবার। ৬ তারিখে হিন্দু ভাইবোনদের দায়িত্ব দিয়ে রাখব। রমজান চলছে। মুসলিম ভাইবোনেদের উপরে যাতে অত্যাচার না হয় তার জন্য গ্রামে গ্রামে তাদের দেখতে হবে। ওরা সংখ্য়ালঘু। ওরা যেন আমাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পায়। কোনও আদিবাসীর গায়ে হাত যেন না পড়ে। তরুণরা এগিয়ে আসুন। আপনারা পারবেন না দাঙ্গাবাজদের রুখতে?
গোলমালকারীদের সতর্ক করে গিয়ে মমতা বলেন, যারা রাস্তা ভাঙছে তারা জেনে রাখুন, একটা আইন হয়েছে। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে সরকারি বা ব্য়ক্তিগত সম্পত্তি ধ্বংস করলে আপনার জমি নিলাম করে যাদের বাড়ি পুড়েছে তাদের দিয়ে দেওয়া হবে। তাই সাবধান থাকুন।