নারায়ণ সিংহ রায়: চোরাই গাড়িতে চেপে এসে এটিএম-এ ঢুকল দুষ্কৃতীদল। এরপর সিসিটিভি ক্যামেরায় কালো রং স্প্রে করে এটিএম ভেঙে সব লুটে নিয়ে চলে গেল তারা। পুলিস তাদের গাড়ি দেখতে পেয়ে তাড়া করেও নাগাল পেল না। কারণ তাদের পুরনো গাড়ি পেরে উঠতে পারেনি দুষ্কৃতীদের গাড়ির সঙ্গে। এটিএমএটিতে ছিল প্রায় ১৪ লাখ টাকা। এমনটাই সূত্রের খবর। বুধবার ভোর তিনটে নাগাদ ওই চুরির ঘটনা ঘটেছে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন এলাকায়।
পুলিস সূত্রে খবর, অপারেশন চালিয়ে চলে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের গাড়ি নজরে পড়ে যায় আশিঘর আউটপোস্টের পুলিসের নজরে। পুলিস দুষ্কৃতীদের টাটা সুমোটিকে তাড়া করেও কোনও নাগাল পায়নি। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি জানিয়ে দেওয়া হয় আসপাশের থানাগুলিকে।
এদিকে, দুষ্কৃতীরা এটিএম থেকে বেরিয়ে গেল কোনওক্রমে সেখানে আগুন লেগে যায়। ছুটে আসে ফুলবাড়ি দমকলের কর্মীরা। কিছুক্ষণের চেষ্টায় সেই আগুন নেভানো হয়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আইসি ভক্তিনগর এবং ডিসিপি ইস্ট রাকেশ সিং।
পুলিস সূত্রে খবর, এটিএমের পাশে একটি ফাঁকা জায়গায় টাটা সুমো দাঁড় করিয়ে এই অপারেশন চালানো হয়। পুরো অপারেশনটি যাতে সিসিটিভির মধ্যে না আসে সেই কারণে সিসিটিভিতে স্প্রে করে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনার খবর পাওয়ার পর শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের প্রতিটি থানা কে সতর্ক করার পাশাপাশি জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার দার্জিলিং ও উত্তর দিনাজপুর জেলার পুলিসকে সতর্ক করে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস। ট্যাক্সি নম্বরের একটি টাটা সুমোয় করে এই অপারেশন চালায় দুষ্কৃতীরা। জানা গিয়েছে টাটা সুমোটি সাদা রংয়ের।
আরও পড়ুন-চোখ রাঙাচ্ছে নিম্নচাপ, টানা ৪ দিন দুর্যোগে তোলপাড় হবে দক্ষিণবঙ্গ
আরও পড়ুন-২০২৬ সালে খড়গপুর থেকে কি দলের প্রার্থী? কী বললেন দিলীপ ঘোষ...
এটিএম লুঠের ঘটনায় উঠে আসছে একের পর এক তথ্য। যে টাটাসুমো ব্যাবহার করা হয়েছিল সেটা শিলিগুড়ির অম্বিকানগর থেকে চুরি করা হয়। সেই টাটাসুমো করে এটিএম লুঠ করে এলাকা থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তবে টাটাসুমোর মালিক সুজিত সুরের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি গতকাল রাতেই সিকিম থেকে ভাড়া নিয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছে তার বাড়ির সামনে গাড়ি রেখে দেন ৷ পরবর্তীতে বুধবার সকালে কোন এক পরিচিত ব্যাক্তি তাকে ফোন করে জানান তার গাড়ি মাটিগাড়ার হিমাচল বিহারে পড়ে রয়েছে ৷ গাড়ির মালিক সেখানে গিয়ে পুলিসকে জানান। পুলিস এসে দেখে গাড়িতে তার কাটার, স্প্রে মেশিন ও একটি জ্যাকেট পড়ে রয়েছে।
অন্যদিকে, এটিএম দেখাভালকারী সংস্থার কর্মী পবন কুমার গুপ্তার বক্তব্য অনুযায়ী, ভোর ৩ টে ১৭ নাগাদ সিসিটিভি ক্যামেরায় কালো রঙ স্প্রে হয়। আনুমানিক পনেরো মিনিটের অপারেশন চলে। একজন ব্যাক্তি মুখ ঢেকে প্রথমে এটিএমে ঢুকে স্প্রে করে। তারপর শুরু হয় অপারেশন। প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা লুঠ করে তারা।
একের পর এক চুরি ছিনতাই
১৩ জুন জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে ৫৪ লক্ষ টাকা এটিএম লুট।
১৮ জুন শিলিগুড়ির প্রধাননগরে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা এটিএম লুট।
২২ জুন শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে জুয়েলারি থেকে কুড়ি কোটি টাকার স্বর্ণালংকার লুট।
২৫ জুন শিলিগুড়ির হায়দর পাড়া গলার মালা ছিনতাই।
২৬ জুন শিলিগুড়ির আশিঘর এলাকায় গলার মালা ছিনতাই।
২৭ জুন এনজিপি থানা এলাকায় একটি বাড়িতে চুরি। লক্ষাধিক টাকা।
২৮ জুন শান্তিনগর বউবাজার এলাকায় একটি বাড়িতে চুরি মহিলার স্বর্ণালংকার ছিনতাই।
২৮ জুন মেডিকেল আউটপোস্ট এলাকায় এক মহিলার গলার মালা ছিনতাই রাস্তায় ফেলে দিয়ে।
২৯ জুন প্রধান নগর থানা এলাকায় এক মহিলার গলার মালা ছিনতাই রাস্তায় ফেলে দিয়ে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)