মৃত্যুঞ্জয় দাস: জঙ্গলমহলে ক্রমশ তেজি হচ্ছে কুড়মি আন্দোলন। অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের কনভয়ে থাকা মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলায় অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতকে। তার পরে আরও জোরাল হচ্ছে কুড়মি আন্দোলন। কুড়মিদের দেওয়ালে কোনও রাজনৈতিক দলকে দেওয়াল লিখতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করেছিল কুড়মিরা। এবার সরাসরি তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলে দেওয়াল লিখতে শুরু করল তারা।
আরও পড়ুন-স্ত্রীকে মারাত্মক সন্দেহ, ভয়ংকর কাণ্ড করে বসলেন কালনার প্রৌঢ়
সিআরআই রিপোর্টের উপরে কমেন্ট ও জাস্টিফিকেশন কেন্দ্রের কাছে না পাঠালে তৃণমূলকে সমর্থন করা হবে না। এমনই দেওয়াল লিখতে শুরু করলে কুড়মিরা। এনিয়েই শুরু হল রাজনৈতিক চাপানউতোর। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাঁকুড়া সফরের সময়েই জায়গায় জায়গায় তাঁর গাড়ি ঘিরে তাদের দাবির কথা তুলে ধরে কুড়মিরা। অভিষেক সেইসব কথা শোনেন ও দলের তরফে যা করার তা তিনি করবেন বলে আশ্বাস দেন। পাশাপাশি কোথাও কোথাও জানিয়ে দেওয়া হয়, কুড়মিদের দাবি মানা না হলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের পাশে থাকবে না কুড়মিরা। এবার সেই বক্তব্যবেরই প্রতিফলন দেখা গেল দেওয়াল লিখনে।
তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বাঁকুড়ার খাতড়া ব্লকের মুড়াগ্রামে কুড়মিরা দেওয়াল লিখন করে জানিয়ে দিয়েছে সিআরআই-এর জাস্টিফিকেশান ও কমেন্টস দ্রুত না পাঠালে তৃণমূলকে কোনোওভাবেই সমর্থন নয়। কুড়মি সমাজের এমন বার্তা কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। সাধারণ কুড়মি গ্রামবাসীদের একটা বড় অংশ সমাজের এই জেহাদকে কার্যত সমর্থন জানাচ্ছেন।
কুড়মিদের এমন দেওয়াল লিখন আসলে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি রাজ্য সরকারের বঞ্চনারই বহিঃপ্রকাশ বলছে বিজেপি। কুড়মি কাঁটার মাঝেই কুড়মিদের এমন হুঁশিয়ারি মূলক দেওয়াল লিখনে স্বভাবতই অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল। তবে তাঁদের দাবি এর কোনো প্রভাব কুড়মি ভোট ব্যাঙ্কে পড়বে না।
কুড়মি যুবক অনুকুল মাহাতোর বক্তব্য, দীর্ঘ ৭ বছর ধরে কুড়মিদের সিআরআই রিপোর্টের উপরে কমেন্ট ও জাস্টিফিকেশন আটকে রেখেছে সরকার। তার জন্যই এই আন্দোলন। আমরা বলেছি, কোনও কুড়মি, মাহাতোর দেওয়ালে কাউকে রাজনৈতিক প্রতার করতে দেওয়া হবে না। এনিয়ে কুড়মি সমাজ ঐক্যবদ্ধ। দীর্ঘ আন্দোলনে আমরা যাব।
কুড়মিদের ওই ঘোষণা নিয়ে তৃণমূলের দাবি, কুড়মিদের ওই ঘোষণা তৃণমূলের উপরে কোনও প্রভাব পড়বে না। সিআরআই পাঠাতে হবে বলেই পাঠানো যায় না। ওরা কী বলছে তা আগে ওরা স্পষ্ট করুক। দরকার হলে এনিয়ে কুড়মিদের মধ্যে গণভোট নেওয়া হোক। সিআরআই জাস্টিফিকেশনটা কী কারও কাছে স্পষ্ট নয়। কুড়মিরা বিহার, ঝাড়খণ্ডে আছে। তাদের দাবি যদি ন্যায়সম্মত হয় তাহলে সবাই তা সমর্থন করবে। আসলে জঙ্গলমহলে ভোট বাঞ্চাল করার চেষ্টা চলছে। একসময় মাওবাদীরাও অনেককিছু করেছিল। এখন তা মিলিয়ে গিয়েছে। আন্দোলনের নামে বিভাজন সৃষ্টি নয়।