মৌমিতা চক্রবর্তী:
শনিবার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। এই আবহেই এবার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় (Pahalgam Terror Attack) নিহত বিতান অধিকারীর (Bitan Adhikari) স্ত্রী সোহিনী রায়কে ভারতীয় নাগরিকত্ব (Indian citizeship) প্রদান করল কেন্দ্র। শনিবার একথা জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
আরও পড়ুন: Fact Check on Imran Khan Death in Jail: আশঙ্কাই সত্যি! জেলেই খুন হয়ে গেলেন ইমরান খান! যদিও...
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন কলকাতার পাটুলির বাসিন্দা বিতান। কর্মসূত্রে স্ত্রী এবং সন্তানকে নিয়ে থাকতেন আমেরিকায়। তাঁর স্ত্রী সোহিনী বাংলাদেশের নাগরিক বলে অভিযোগ করেছিলেন প্রয়াত বিতানের দাদা বিভূ অধিকারী।
শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুকান্ত বলেন, 'বিতানবাবু, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার যার মৃত্যু হয়েছিল, তাঁর স্ত্রী সোহিনী রায়কে ভারত সরকার নাগরিকত্ব দিয়েছে। বিবাহসূত্রে অনেক আগেই তিনি এদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনকে ভারত সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। ভারত সরকারকে আমি ধন্যবাদ জানাই।' তিনি আরও বলে, 'বিতানবাবু স্ত্রীর মাথার সিঁদুর দেখে, তাঁর ধর্ম জেনে বিতানবাবুকে খুন করা হয়েছিল। ভারত সরকার তাঁকে নাগরিকত্ব দিয়ে নতুন জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।' সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা'কেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ২৬ পর্যটক। যাঁদের মধ্যে ছিলেন কলকাতার পাটুলির বাসিন্দা বিতান অধিকারী। কর্মসূত্রে আমেরিকায় থাকা বিতান তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। কলকাতায় ফিরে আসার পরই সদ্য স্বামীহারা সোহিনী দাবি করেছিলেন, তাঁর কপালের সিঁদুর ও স্বামী হিন্দু বলেই খুন করেছে এই জঙ্গিরা।
এদিকে, সোহিনী বাংলাদেশের নাগরিক বলে অভিযোগ করেছিলেন প্রয়াত বিতানের দাদা বিভূ অধিকারী। এমনকি তিনি দাবি করেছিলেন, পরিচয় গোপন করে তাঁর ভাই, পেশায় আইটিকর্মী বিতানকে বিয়ে করেছিলেন সোহিনী। ভারতীয় পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সোহিনী এদেশে রয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও জবাবই দেননি সোহিনী। অবশেষে এদিন ভারতের নাগরিকত্ব পেলেন তিনি।
কাশ্মীর থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে সোহিনীরা নামার পরে রাজ্য সরকারের তরফে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং অরূপ বিশ্বাস হাজির ছিলেন। তেমনই সেখানে উপস্থিত হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুকে সোহিনী জানান, হিন্দু বলে তাঁর স্বামীকে গুলি করে মেরেছে জঙ্গিরা।
তিনি শুভেন্দুর ভরসায় কলকাতায় এসেছেন। এর পর বিতানের দাদা বিভু অভিযোগ করেন, সোহিনী এখনও বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁর আরও অভিযোগ, বছর দুয়েক আগে সোহিনী এবং তাঁর মা ভারতী রায়ের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলা এখনও চলছে। ভারতী বাংলাদেশ চলে গিয়েছেন। তবে এ দেশে থেকে যান তাঁর মেয়ে।
বিভু আরও দাবি করেছিলেন, পরিচয় গোপন করে তাঁর ভাই, পেশায় আইটি কর্মী বিতানকে বিয়ে করেছিলেন সোহিনী। বিভু বলেছিলেন, 'সোহিনীর দুটো জন্ম-শংসাপত্র রয়েছে। উনি আদতে বাংলাদেশের নাগরিক। পরে ওঁরা এ দেশের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ইত্যাদি বানিয়েছিলেন। পরে প্রমাণ হয়েছে, সেগুলো ভুয়ো।' দাবি করেছিলেন, 'উনি (সোহিনী) আগে বিতানের সঙ্গে আমেরিকায় ছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে এ দেশে আছেন। কারণ, ফেব্রুয়ারি মাসে সোহিনীর ভারতীয় পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে।'
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)