অরূপ লাহা: ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠল স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে। গ্রামবাসীরা জড়ো হয়ে স্কুল ঘেরাও করেন। অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে টিচার্স রুমে তালাবন্ধ করে রাখা হয়। প্রায় ঘন্টা তিনেক চলে উত্তেজনা। ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। শেষে ভাতার থানার পুলিসবাহিনী অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধার করে করে নিয়ে যায়। শিক্ষককে উদ্ধার করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় পুলিসকে।
আরও পড়ুন, ATM Fraud: 'বুঝতেই পারিনি, ও আমার জীবনভর সঞ্চয়টা নিয়ে পালাবে', লক্ষাধিক টাকা হারিয়ে বৃদ্ধার আর্তি...
বিশেষ করে মহিলারা রীতিমতো পুলিস আধিকারিক ও কর্মীদের হেনস্তা করে। এমনকি পুলিসের উদ্দেশ্যে ইঁটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে। শেষে পুলিস লাঠি উঁচিয়ে উত্তেজিত গ্রামবাসীদের হটিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্বে আনে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিস অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, শিক্ষক এক স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করেছে, তাই তাকে আটকে রাখা হয়েছিল। আমরা এর একটা প্রতিকার চাই।
স্কুলে এর আগেও অনেকবার শ্লীলতাহানি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তারা একটু বড় ক্লাসের ছিল তাই লজ্জায় প্রতিবাদ করতে পারেনি। এখন ছোট ক্লাসের একটি ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করায় সে প্রতিবাদ করে এবং দিদিমণিদের জানায়। কিন্ত তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টে শিক্ষিকারা বলেছেন, 'যদি বাড়িতে বল তাহলে টিসি দেওয়া হবে।' স্কুলের প্রধানশিক্ষক জানান, একটা বাজে ঘটনা ঘটেছে, মাস্টারমশাই ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। মেয়েটি যেটা বলছে তাকে ব্যাড টাচ করা হয়েছে। শিক্ষিকাদের হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, শিক্ষিকারা ক্ষমা চাওয়া করিয়েছেন। আগে এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি।
স্কুলে সাড়ে চারশো ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ছাত্রী সোমবার ছুটির পর বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের জানায় স্কুলের এক শিক্ষক তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে। ছাত্রীর বাবা মা, মঙ্গলবার ঘটনার কথা প্রতিবেশীদের কাছে জানান। ছাত্রীর বাবা মা পাড়াপড়শিদের কাছে ঘটনার কথা বলতেই মঙ্গলবার দুপুর বারোটা নাগাদ ছাত্রীর পরিবার প্রতিবেশীরা স্কুলে যান। ততক্ষণে গ্রামের অন্যান্য পাড়ায় খবর চলে যায়। বিভিন্ন পাড়া থেকে লোকজন ভিড় করেন স্কুলে। ওই শিক্ষককে চেপে ধরেন গ্রামবাসীরা।
তখন স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত শিক্ষককে রক্ষা করতে টিচার্স রুমে আটকে তালা লাগিয়ে দেন। স্কুলের বাইরে চলে একটানা বিক্ষোভ। ইতিমধ্যে খবর যায় পুলিসের কাছে। পুলিস উত্তেজিত গ্রামবাসীদের বোঝানোর চেষ্টা করে। বিকেল প্রায় সাড়ে চারটে নাগাদ অভিযুক্ত শিক্ষককে স্কুল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিস। স্থানীয়দের অভিযোগ এর আগেও স্কুলে ওই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু তখন লোকলজ্জার ভয়ে অভিভাবকরা প্রকাশ্যে আনেননি। পুলিস জানায়, এদিন বিকেল পর্যন্ত এনিয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়নি।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)