শ্রীকান্ত ঠাকুর: হিন্দি বলতে না পারায় বাংলাদেশি সন্দেহে মুম্বাইয়ে আটক পতিরামের অসিত সরকার। ৪ মাস ধরে মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে আটক বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক। দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরাম থানার অন্তর্গত লক্ষ্মীপুর ভেসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অসিত সরকার (৪৫)। কাজের সন্ধানে মুম্বইয়ে যান। সেখানে গিয়েই চরম দুর্ভোগের শিকার। পরিবারের অভিযোগ, হিন্দি ভাষায় ঠিকমতো কথা বলতে না পারার কারণেই মহারাষ্ট্র পুলিস তাঁকে বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে ৪ মাস আগে 'গ্রেফতার' করেছে। সেই থেকেই তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গিয়েছে, প্রায় ৬ মাস আগে অসিতবাবু মুম্বইয়ের একটি রঙের কারখানায় কাজ পেয়ে সেখানে পাড়ি জমান। মুম্বই শহর থেকে কিছুটা দূরে ভাদর কমলাবায় খুলিতে তিনি আরও কয়েকজন বাঙালি শ্রমিকের সঙ্গে থাকছিলেন। সেখান থেকেই প্রতিদিন যাতায়াত করতেন কোম্পানির ফ্যাক্টরিতে। ঘটনার দিন পুলিস আচমকাই ওই রঙের কারখানায় তল্লাশি চালায়। পরিচয় যাচাইয়ের সময় অসিতবাবু ও আরও একজন শ্রমিক হিন্দি ভালোভাবে বলতে না পারায় সন্দেহ হয় তারা বাংলাদেশি। পুলিসের জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁরা জানান, তাঁরা ‘বাঙাল’ থেকে এসেছেন। এই কথার ভিত্তিতেই পুলিসের আরও সন্দেহ বাড়ে বলে জানা গিয়েছে। তারপরই ২ জনকে 'গ্রেফতার' করে।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, গ্রেফতারের পর থেকে অসিতবাবুর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বারবার চেষ্টা করেও মুম্বই পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এমনকি স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিসের কাছ থেকেও তারা পর্যাপ্ত সহায়তা পাননি বলেও অভিযোগ করেছেন অসিতবাবুর স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। চরম উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে পরিবারটি। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, শুধুমাত্র ভাষাগত সমস্যার কারণে একজন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশি সন্দেহে মাসের পর মাস আটক রাখা ন্যায়সঙ্গত নয়।
স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অসিত সরকারের দ্রুত মুক্তি এবং নিরাপদে বাড়ি ফেরার দাবিতে তাঁরা সরব হয়েছেন। এদিকে গোটা ঘটনার ন্যায়বিচারের আশায় এখন প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে চলেছে অসিতবাবুর পরিবার। একজন পরিযায়ী শ্রমিকের ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে এই দুরবস্থা নিয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। সবার মনে একটাই প্রশ্ন—"কবে ফিরবেন অসিত সরকার?"
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)