প্রসেনজিত্ মালাকার: এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রীঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকার উদ্ধারের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তার নামে একাধিক বাড়ি-জমির সন্ধান মিলেছে। বিরোধীরা অবশ্য দাবি করছেন, এসব সম্পত্তি হিমশৈল্যের চূড়া মাত্র। অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের কাছ থেকে পাওয়া বিপুল টাকার পাশাপাশি খবর এসেছে শান্তিনিকেতনে পার্থ ও অর্পিতার বাড়ি অপা-র কথা।
শন্তিনিকেতনে সেই বাড়ি দেখতে ভিড় করছেন পর্যটকরা। অনেকেই মনে করছেন শান্তি নিকেতনে অপা নামের বাড়িটির নামকরণ করা হয়েছে অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায় ও পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে। অনেকেই সেই বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়ে সেলফি, ছবি ও ভিডিয়ো তুলছেন। শোনা যাচ্ছে শান্তিনিকেতনে এরকম আরও ৬টি বাড়ি রয়েছে পার্থ ও অর্পিতার নামে। সব জায়গাতেই ভিড় জমাচ্ছেন মানুষজন। কেউ কেউ বলছেন টাকার পাহাড় তো সামনাসামনি দেখতে পাইনি তাই বাড়ি দেখতে এলাম।
এদিকে, শুক্রবারই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ৩টি অ্যাকাউন্ট সিজ করে ইডি। শনিবার পার্থ-অর্পিতার একাধিক ভুয়ো সংস্থার ৮টি অ্যাকাউন্ট সিজ করা হয়েছে। পার্থ-অর্পিতা এবং তাঁদের অত্মীয়দের অ্যাকাউন্টেরও খোঁজ নিচ্ছে ইডি। এই অ্যাকাউন্টগুলিতে বিভিন্ন সময়ে বেআইনি টাকা পাঠানো হয়েছে। এমনকী হাওয়ালার মাধ্যমেও বিপুল পরিমাণ টাকা পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
কালো টাকা লুকোতে পেপার কোম্পানিকে (Shell Company) হাতিয়ার করেছিলেন অর্পিতা (Arpita Mukherjee) ও পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, জামির সানশাইন, সেনেন্ট্রি ইন্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড, সিম্বোইসিস মার্চেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড— কর্পোরেট মন্ত্রকের তথ্য বলছে এরকমই আরও একাধিক সংস্থার ডিরেক্টর অর্পিতা ও যুগ্ম ডিরেক্টর কল্যান ধর। কালো টাকাকে সাদা করতে যে অসংখ্য “পেপার” বা সেল কোম্পানিকে হাতিয়ার করা হয়েছিল ইডির।
কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সূত্রে খবর, বীরভূম ও কলকাতা মিলিয়ে কমপক্ষে ৩২টি সম্পত্তির অধিকারী অর্পিতা ও তার নামে থাকা সংস্থা। কলকাতার নয়াবাদেই মিলেছে ১৩টি ফ্ল্যাটের সন্ধান। ২টি ফ্ল্যাট রয়েছে ঠাকুরপুকুর এমজি রোডে, ১টি দুর্গাপ্রসন্ন রোডে, ২টি ফ্ল্যাট গাঙ্গুলিবাগানে। মাদুরদহে ফ্ল্যাট ছাড়াও রয়েছে জমি সহ বাড়ি। আগেই ডায়মন্ড সিটি সাউথে ৩টি ফ্ল্যাট, ক্লাবটাউনে ২টি ফ্ল্যাটের হদিশ মিলেছিল।
অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বানতলার চর্ম নগরীর পেছনে ১০ বিঘে জমি কিনেছিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এমনটাই তদন্ত সংস্থা সূত্রে খবর। ওই জমিটি এখন পাঁচিল দেওয়ার কাজ চলছে। জমিটিকে এলাকার মানুষজন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বলেই জানে। চার বছর আগে ওই জমি কেনা হয় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে। একটি আড়াই বিঘে এবং অন্যটি সাড়ে সাত বিঘে। দুটো পৃথক দলিল করা হয়। বেলেঘাটার একটি পরিবার ওই জমি বিক্রি করে। স্থানীয়দের দাবি, বানতলা চর্ম নগরীর দক্ষিণ দিকের ওই বিশাল জমি কেনা হয় জলের দরে।