রণজয় সিংহ: রামায়ণে (Ramayana) লক্ষ্মণকে বাঁচাতে যে ওষুধ ব্যবহার হয়েছিল, সেই গাছের নাম বিশল্যকরণী (Visalyakarani)। যা পৃথিবীতে বর্তমানে আয়াপান (Ayapana triplinervis) নামে পরিচিত। আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ-সহ পাশ্চাত্যে তার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই আয়াপানের পাতাকে চায়ের মতো করে খেলে কমে রক্তচাপ।
বিশল্যকরণী
আয়াপান সংস্কৃতে বিশল্যকরণী। এর বৈজ্ঞানিক নাম: আয়াপান ট্রিপলিনার্ভিস। 'অ্যাস্টেরেসি' পরিবারের বিরুৎজাতীয় ভেষজ গুণসম্পন্ন সপুষ্পক উদ্ভিদ এটি। আদতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আমেরিকান বিরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ। এটি একটি রক্তরোধক, ক্ষত ও ব্যথানাশক গাছ হিসেবে পরিচিত। বলা হয়, কাশি বুকে বসে গেলে এই পাতার রস চিনি দিয়ে একটু গরম করে সকালে পেটে খেলে উপকার পাওয়া যায়। কেটে গেলে কাটা স্থানে বিশল্যকরণীর রস দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। পাইলস, রক্তস্বল্পতা-সহ বহু রোগের ঔষধি এই আয়া পান।
মালদা কলেজের বটানি ডিপার্টমেন্টে
বিদেশের বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা। আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে এবার পরীক্ষার ভিত্তিতে আয়া পান চাষ শুরু করল মালদা কলেজের বটানি ডিপার্টমেন্ট। মালদা কলেজ চত্বরেই এই ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে ছাত্র-ছাত্রীরা শুরু করেছে পরীক্ষামূলক পদ্ধতিতে এই আয়া পান চাষ। আর এতে সফলতা এলেই খুলে যাবে নতুন দিশা।
চাষবাস
নিত্যদিনের জীবন-জীবিকার পাশাপাশি যদি এই উদ্ভিদের চাষ করা হয়, তাহলে খুবই ভালো হয়। কারণ, এই গাছের পাতার বিশেষ চাহিদা বিদেশের বাজারে। ঠিকঠাক চাষ করলে বিঘা প্রতি এক লক্ষ টাকা আয় হতে পারে-- এমনই দাবি মালদা কলেজের অধ্যক্ষের। যে পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে তাতে সফলতা আসার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বটানি ডিপার্টমেন্টের হেড অফ দা ডিপার্টমেন্ট পীযূষ সাহা।
আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে
ইতিমধ্যেই মালদা কলেজ চত্বরে বটানি ডিপার্টমেন্টের পাশের বাগানে আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে এর চাষ। ব্যবহার করা হচ্ছে না কোনও রকম রাসায়নিক সার। এর আগেও মালদা কলেজের বটানি ডিপার্টমেন্ট বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ঔষধের চাষ করে নজর কেড়েছে। এবার এই আয়া পান যাকে বাংলায় বলে বিশল্যকরণী, তা কতটা সফলতা এনে দেয় সেটাই দেখার।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)