বিধান সরকার, হুগলী
ফের ন্যক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী থাকল হুগলীর বাঁশবেড়িয়া সাহেববাগান এলাকার ঘটনা। স্ত্রী জ্যোতি পাশি নাকি পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন। এমনটাই বিশ্বাস করতেন তাঁর স্বামী সন্দীপ পাশি। আর তাই শুধু সন্দেহের বশে স্ত্রীয ও দুই ছোট সন্তানকে ছুরি দিয়ে খুনের চেষ্টা করলেন অভিযুক্ত। তিনজনকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন জ্যোতি পাশির মা। যদিও এই ঘটনা জানাজানি হতেই অভিযুক্ত সন্দীপ পাশিকে গ্রেফতার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মগরা থানার পুলিস।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর,সন্দীপ পাশি দিন মজুর। কয়েক মাস ভিনরাজ্যে কাজ করতেন। তবে বর্তমানে বাঁশবেড়িয়াতেই দিন মজুরি করেন। শুক্রবার অর্থাৎ ১৯ মে বিকালে কাজ থেকে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফেরেন তিনি। এদিকে প্রতিবেশী ও দূর সম্পর্কের আত্মীয় কমল সেই সময় সন্দীপ পাশির বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্তর সন্দেহ, জনৈক কমলের সঙ্গে নাকি তাঁর স্ত্রী জ্যোতি পাশির বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সেই সন্দেহের বশে ছুরি বের করে স্ত্রী জ্যোতি পাশির শরীরে চালাতে থাকেন সন্দীপ পাশি। ফলে স্ত্রী জ্যোতি পাশির হাত ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লাগে। স্ত্রী জ্যোতি পাশিকে বাঁচানোর জন্য কমল, অন্য একটি ঘরে বন্ধ করে দেয়। সেই সুযোগে সন্দীপ পাশি তাঁর দুই সন্তানের উপর চাউর হন। এবং চার বছর এবং দেড় বছরের দুই ছেলের গলায় ছুরি চালিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: Abhiskek Banerjee: 'দশগুণ উৎসাহ নিয়ে নবজোয়ার কর্মসূচি শুরু করব', সিবিআই তলবে হুঁশিয়ারি অভিষেকের
ঝামেলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন সন্দীপের শ্বশুর বাড়ির লোকজন। সন্দীপের শ্বশুর-শ্বাশুড়ি তাঁদের মেয়ে ও দুই নাতিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। যদিও জামাইকে আটকাতে গেলে শ্বাশুড়িও আক্রান্ত হন। কারণ তাঁকে ছুরি মারেন অভিযুক্ত। যদিও বড় ক্ষতি হওয়ার আগেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন বাঁশবেরিয়া মিল ফাঁড়ির পুলিস। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বিশাল পুলিসবাহিনী।
এদিকে আহত চারজনকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত দুই শিশুর গলায় গভীর ক্ষত হয়। ফলে দ্রুত তাদের অস্ত্রোপচার করাতে হয়। এরপর জ্যোতি বলেন, "আমার স্বামী সন্দেহের বশে অত্যাচার করে। এবং দুই সন্তানকে খুন করার চেষ্টা করে।"
জ্যোতির বাবা তারক রাজভর বলেন, "নিজেরা প্রেম করে বিয়ে করেছিল। বছর পাঁচেক আগে। তবে বিয়ের পর থেকে পনের জন্য মেয়েকে নানা ভাবে অত্যাচার করতে থাকে আমার জামাই। আমার মেয়ের স্বভাব ভালো। ওর সঙ্গে অন্য কোনও পুরুষের অবৈধ সম্পর্ক নেই। আমার একটা ছোটো দোকান আছে। আমি জামাইকে বলেছিলাম যে, দোকানটা ওর নামে লিখে দেব। কিন্তু এরপরেও আমার জামাই মদ খেয়ে এসে এই কাণ্ড ঘটন। আর তাই মেয়ে ও দুই নাতিকে ওর পাঠাব না। কারণ আমার জামাই ওদের খুন করতে পারে।"