তপন দেব: ট্রেন ও হাতির সংঘর্ষ ঠেকাতে চালু করা হবে অত্যাধুনিক ডিভাইস। তা চালু করার আগে পরীক্ষা করা জরুরি। পরীক্ষা করতে হাজির ছিলেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার চেতন কুমার শ্রীবাস্তব। রেলের অধীনস্থ কোম্পানি 'বিটকন টেকনোলজি'র কর্মী নয়ডার বাসিন্দা সন্দীপ চৌধুরী। তিনিও রেলের জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে রাজাভাতখাওয়ায় এই ডিভাইসের কাজ সরেজমিনে দেখানোর জন্য যান। কিন্তু সেখানেই ঘটে গেল ভয়ংকর কাণ্ড।
হাতির সঙ্গে রেলের সংঘর্ষ ঠেকানো যাবে কী ভাবে, তা দেখানোর জন্য বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দমনপুর রেঞ্জের পোষ্য হাতি জোনাকিকে নিয়ে হাজির ছিলেন বন দফতরের মাহুতও। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন! সহসা একটি ট্রেন চলে আসায় সকলে দূরে সরে যান।
Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News
সকলে পারলেও সন্দীপ চৌধুরী পারেননি। তিনি হঠাৎ করেই মাটিতে পড়ে যান। ওদিকে, সেই সময়েই জোনাকি ট্রেনের আওয়াজে ভয় পেয়ে যায় এবং দূরে সরে যেতে থাকে। এই সময়ে মাটিতে পড়ে যাওয়া সন্দীপবাবুর মুখের উপরেই গিয়ে পড়ে জোনাকির একটি পা। সঙ্গে সঙ্গে ভয়ংকর ভাবে আহত হন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত হয়ে পড়েন সকলে। হতচকিত হন রেলের জেনারেল ম্যানেজারও। শোকের ছায়া নেমে আসে রেলকর্মীদের মধ্যে।
বহুদিন ধরেই চেষ্টা চলছিল, ট্রেনের ধাক্কায় যাতে একটিও বন্যপ্রাণীর মৃত্যু না হয়! বিশেষ করে ট্রেনের ধাক্কায় হাতিমৃত্যু ঠেকাতে খুবই সক্রিয় হয়ে উঠেছে রেল। রেলের অধীনস্থ বেশ কয়েকটি কোম্পানি এ ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু যন্ত্র আবিষ্কার করেছে। যা দিয়ে দুর্ঘটনা থেকে হাতির মৃত্যু শূন্যে নামিয়ে আনা যাবে বলে আশা রেল কর্তাদের।
আজ আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশনে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার চেতন কুমার শ্রীবাস্তব সরেজমিনে এই যন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা করেন। আগেই জানা গিয়েছিল, এলিফ্যান্ট ইনক্লুশন ডিটেকশন সিস্টেম নামে এক বিশেষ ডিভাইস দিয়ে এই কাজ করা হবে। জেনারেল ম্যানেজার জানান, দুবছর ধরে বেশ কিছু জায়গায় এই সিস্টেম দিয়ে কাজ করা হয়েছে। ফলও পাওয়া গিয়েছে। রেলের তরফে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের ১৩০- ১৫০ কিলোমিটার বনাঞ্চল রয়েছে এমন রেলপথে এই সিস্টেম কাজ করবে। এর জন্য রেল মন্ত্রক অর্থ বরাদ্দও করেছে।
এই সিস্টেমে সাফল্য পাওয়া গেলে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, যেখানে জঙ্গলের বুক চিরে রেলপথ গিয়েছে সেখানেও, এই সিস্টেম ব্যবহার করা হবে। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ক টেন্ডার করা হবে। রেলের জেনারেল ম্যানেজারের দাবি, ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে গোটা প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। ঠেকানো যাবে হাতিমৃত্যুও। কিন্তু হাতিমৃত্যু ঠেকানোর কাজ করতে গিয়ে ঘটল মানুষের মৃত্যু।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)