নিজস্ব প্রতিবেদন : বউ-বাচ্চা ফেরতের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে ধরনায় বসলেন যুবক। ঘটনাটি মালবাজারের ক্রান্তির কাঠামবাড়ি এলাকার। যুবকের দাবি, দেড় বছরের মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে এসেছে বউ। শ্বশুরবাড়ির চাপে স্ত্রী আর বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন না। তাঁদের সন্তানকে নিয়ে তাঁর সঙ্গে থাকতে চাইছেন না। যদিও স্বামীর অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা তাঁর বিরুদ্ধে মারধর, অত্যাচারের অভিযোগ করেছেন স্ত্রী-ও।
গায়ে 'বউ ফেরতে'র পোস্টার সেঁটে, হাতে মেয়ের ছবি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আচমকাই শ্বশুরবাড়ির গেটের সামনে ধরনায় বসেন হরিদাস মন্ডল নামে ওই যুবক। পেশায় রাজমিস্ত্রী ওই যুবকের দাবি, ৪ বছর আগে কাঠামবাড়ি এলাকার বাসিন্দা জ্যোৎস্না মন্ডলের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের একটি মেয়েও হয়। মেয়ের বয়স এখন দেড় বছর। প্রথম প্রথম সবকিছু ঠিকঠাক-ই ছিল। কিন্তু গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সংসারে অশান্তি চলছে। হরিদাসের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির ইন্ধনেই তাঁর ও জ্যোৎস্নার সংসারে অশান্তি শুরু হয়। এরপরই ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যায় বউ। শ্বশুরবাড়ির চাপেই সে আর মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরছে না। বারবার স্ত্রী-সন্তানকে ফিরিয়ে নিতে যেতে এলেও তাঁকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই তিনি ধরনায় বসেছেন। যতক্ষণ না বউ-বাচ্চা ফিরে পাচ্ছেন, ততক্ষণ তিনি ধরনা চালিয়ে যাবেন বলে জানান হরিদাস। এমনকি, হরিদাস এও বলেন যে, "এরজন্য মরতেও রাজি আমি।"
যদিও স্বামীর অভিযোগ উড়িয়ে অন্য কথা বলছেন স্ত্রী জ্যোৎস্না। তাঁর সাফ বক্তব্য, "আমি কোনওমতেই আর হরিদাসের সঙ্গে সংসার করতে চাই না। আমার ওপর শারীরিক অত্যাচার করে স্বামী। সেই কারণেই আমি বাপেরবাড়ি চলে এসেছি। এতে আমার বাবা-মার কোনও দোষ নেই। এরপর কিছুদিন বাপেরবাড়িতে এসেও থেকেছিল স্বামী। কিন্তু বাপেরবাড়িতেও আমাকে মারধর করে। এমনকি বাপেরবাড়িতেও মদ্যপান করে আসত। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর স্বামীর সাথে থাকতে চাই না। এইভাবে অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। ছোট মেয়েকে নিয়ে আমি তাই বাপেরবাড়িতেই থাকতে চাই। তবে আমার ও মেয়ের খরচ দিতে হবে স্বামীকে।"
আরও পড়ুন, Shocking Visual: খেলার সময় ১১ মাসের শিশুর মাথায় আটকাল হাঁড়ি!
Malda: ৪ বছরের সম্পর্ক মানেনি প্রেমিকার পরিবার, বাড়িতে এনে রডপেটা করে 'খুন' প্রেমিককে
মঙ্গলবার দুপুরে হরিদাস মন্ডল শ্বশুরবাড়ির গেটে ধরনায় বসতেই কাঠামবাড়ি এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। গায়ে 'বউ ফেরতে'র পোস্টার সেঁটে, হাতে মেয়ের ছবি নিয়ে ধরনারত যুবককে দেখতে ভিড় জমে যায় এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে মধ্যরাত পর্যন্ত ধরনায় বসেছিলেন হরিদাস। তারপর পুলিস এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের আশ্বাসে গভীর রাতে ধরনা তুলে নেন হরিদাস মন্ডল।