জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: জীবনের মূল চাহিদাগুলি না মিটিয়ে সুস্থ জীবনধারণ করা একটু কঠিন হয়ে যায়। অথচ, দারিদ্র্য অনেক মানুষকেই সামান্য এই সব চাহিদাগুলি মেটাতেও নানা রকম বাধা তৈরি করে। বিশ্ব জুড়ে দারিদ্র্য সামাজিক ক্ষেত্রে একটা অভিশাপ। আর সভ্য ও আধুনিক সমাজ এই অভিশাপের সঙ্গে লড়ছে। দারিদ্র্য অনেক রকম ভাবে ছায়া ফেলে জনজীবনে-- বিপজ্জনক বা ঝুঁকিপূর্ণ কর্মসংস্কৃতি, অসুরক্ষিত আশ্রয় বা আশ্রয়হীনতা, সামাজিক অন্যায়-অবিচার, স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে বাধা, খাদ্যসংকট বা পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব সব মিলিয়ে জীবনযাপনের প্রতি পদে মৌলিক অধিকার বিঘ্নিত হওয়া। এই প্রতিটি বিষয়ই দারিদ্র্যের কারণে ঘটে। ফলে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে গেলে এই সব এককগুলিকেই ধীরে ধীরে সরাতে হবে। তার জন্য এক অর্থে সামাজিক সংস্কার প্রয়োজন।
প্রতি বছর আজকের দিনে, ১৭ অক্টোবর বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যদূরীকরণ দিবস। দারিদ্র্য দূর করার সঙ্গে সমাজের এক শ্রেণির মানুষের ক্ষেত্রে নিয়মিত ভাবে যে মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার ঘটনা ঘটে, তা নিবারণ করাও একটা বড় লক্ষ্য দিনটির। ১৯৮৭ সালে প্যারিসে দিনটি প্রথম পালিত হয়েছিল। তবে ১৯৯২ সালে রাষ্ট্রসংঘ দিনটি পালন করার কথা সরকারি ভাবে ঘোষণা করে। এ বছরটি এদিনটির ৩০ তম উদযাপনবর্ষ। দিনটির এ বছরের থিম হল-- 'ডিগনিটি ফর অল ইন প্র্যাকটিস'।
রবীন্দ্রনাথের এই লাইনগুলি এখানে অবশ্যম্ভাবী মনে পড়ে--'এই-সব মূঢ় ম্লান মূক মুখে/
দিতে হবে ভাষা—এই-সব শ্রান্ত শুষ্ক ভগ্ন বুকে/ধ্বনিয়া তুলিতে হবে আশা—ডাকিয়া বলিতে হবে—/মুহূর্ত তুলিয়া শির একত্র দাঁড়াও দেখি সবে'...। সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্য মর্যাদার এবারের এই থিম-ভাবনার মধ্যে কোথায় যেন ধ্বনিত হয় এই লাইনগুলির অর্থ। ম্লান মুখে ভাষা দেওয়া ভাঙা বুকে আশার বান ডাকার মধ্যে দিয়েই তো সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণি লড়তে পারবে দারিদ্র্যের সঙ্গে।