জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফুঁসছেন আয়াতোল্লা খামেইনি? ফুঁসছে ইরান? বোধ হয় বিষয়টা অনেকটা তাই। ভয়ংকর খবর সামনে এল মোসাদের (Mossad) সৌজন্যে। ইসরায়েলের ইনটেলিজেন্স এজেন্সি মোসাদ জানাচ্ছে, ইরান মাত্র ১৫ দিনেই তৈরি করে ফেলতে পারে পরমাণুবোমা! শনির রাতে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে (Iran-Israel War) সরাসরি অংশ নিয়ে নিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার রাত ২টো নাগাদ মার্কিন হানায় কেঁপে উঠল ইরান। ফোরদোতে আছড়ে পড়ল আমেরিকা ৬টি বাংকার বাস্টার বোমা (GBU-57 bunker-buster bombs)! আর এর ঠিক পরেই মোসাদের এই তথ্য ফাঁস! তবে কি প্রতিশোধের আগুনে পুড়তে পুড়তে আমেরিকা আক্রমণ করেই ফেলবে ইরান?
১৫ দিনে পরমাণুবোমা
একটি গোপন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে যে, ইরান দ্রুত পরমাণু বোমা তৈরি করে ফেলবে। মোসাদের হুমকি, মাত্র ২ সপ্তাহেই ইরান বানিয়ে ফেলতে পারে আস্ত সব পরমাণু বোমা। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে সরাসরি আমেরিকার প্রবেশ, ইরানের বুকে হামলার ইত্যাদির পরে বিশ্বে যুদ্ধের আগুন একটু বেশিই তীব্র ভাবে জ্বলে উঠেছে। যে কোনও সময়ে যে কেউ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে। ইরান হয়তো গায়ের জ্বালা মেটাতে আমেরিকাকে আক্রমণ করেই ফেলতে পারে। আর সেক্ষেত্রে তারা তাদের সেরা অস্ত্রটাই ব্যবহার করবে, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই! ইসরায়েলের গোয়েন্দাসূত্র বলছে, ইরান ইতিমধ্যেই অনেকটা ইউরেনিয়াম জমিয়ে ফেলেছে। আর তা নিশ্চয়ই শান্তিকামনায় সঞ্চিত করেনি তারা!
বিশ্বের অন্যতম সুরক্ষিত পরমাণু কেন্দ্র!
ফোরদা নিউক্লিয়ার সাইট বিশ্বের অন্যতম সুরক্ষিত পরমাণু কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এটির গঠন এমনভাবে পরিকল্পিত যে, এটি সরাসরি বোমার আঘাত সহ্য করতে সক্ষম। B-2 বম্বারগুলি টার্গেটের উপর নিখুঁত নিশানায় ফেলেছে ১২টি GBU-57 বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা। যদিও, ইরানের দাবি, তাদের কোনও ক্ষতি হয়নি। তাদের দাবি, ফোরদো-র মাত্র ২টি টানেলে হামলা হয়েছে। অ্যাটাক হয়েছে শুধুমাত্র এন্ট্রি ও এক্সিট টানলেই। ওদিকে, আমেরিকার দাবি, সবই তছনছ হয়ে গিয়েছে। যদিও আমেরিকা এ-ও বলেছে, ইরানের পরমাণুকেন্দ্র থেকে কিন্তু কোনও তেজস্ক্রিয় বিকিরণ দেখা যায়নি!
ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানে
চূড়ান্ত গোপনীয়তার সঙ্গেই পুরো পরিকল্পনাটা করেছে আমেরিকা। এর পরই তারা একে একে ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানের নিউক্লিয়ার সাইটে হামলা চালায়। এই হামলা চালায় মার্কিন বায়ু সেনা। এই আক্রমণেই বড় ভূমিকা নেয় ৬টি বি-২ স্পিরিট স্টিল্থ বম্বার। বিধ্বংসী এই যুদ্ধবিমানগুলি থেকেই ফেলা হয় ৬টি জিবিইউ-৫৭ তথা বাঙ্কার বাস্টার বোমা।
বিধ্বংসী মার্কিনি বোমা
'বাঙ্কার বাস্টার' মাটির গভীরে গিয়ে বিস্ফোরণ করতে সক্ষম। আমেরিকার ক্ষেত্রে 'বাঙ্কার বাস্টারে'র পোসাকি পরিচয় হল-- জিবিইউ-৫৭ এ/বি এমওপি। মার্কিন বিমান বাহিনীর মতে প্রায় ১৩,৬০০ কিলো ওজনের এই বোমা ভূপৃষ্ঠের গভীরে থাকা বাঙ্কার এবং টানেলগুলিতে আক্রমণ করার জন্য তৈরি। বাঙ্কার-বিধ্বংসী এই মার্কিনি বোমা ফাটার আগে ভূপৃষ্ঠের প্রায় ২০০ ফুট (৬১ মিটার) গভীরে প্রবেশ করতে পারে। বোমাগুলি পরপর নিক্ষেপ করা যেতে পারে। প্রতিটি বিস্ফোরণের সঙ্গেই তা ক্রমশ মাটির আরও গভীরে প্রবেশ করতে পারে। ইরানের ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রটি ভূগর্ভের ৮০ থেকে ৩০০ ফুট গভীরে অবস্থিত বলে মনে করা হয়। কোনও সাধারণ বোমা বা যুদ্ধাস্ত্র তাকে স্পর্শও করতে পারে না বলেই মিথ। আর সেই মিথ খুব অবলীলায় ভেঙে ফেলল আমেরিকা। একটি B-2 স্টিলথ বম্বার বানাতে খরচ ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, ১৮,০০০ কোটি টাকারও বেশি। B-2 উড়লে প্রতি ঘণ্টায় খরচ হয় ১,৫০,০০০ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার বেশি।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)