জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'অপারেশন সিঁদুর'-এর ধাক্কায় দিশেহারা পাকিস্তান, ভারতীয় কূটনীতিকদের জীবন-যাপনের মৌলিক সরবরাহ বন্ধ করে আগ্রাসী নজরদারি বাড়াচ্ছে
ভারতের 'অপারেশন সিঁদুর'-এর জেরে পাকিস্তান তীব্র ক্ষুব্ধ। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের কূটনীতিকদের জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ, এবং জল-এর মতো মৌলিক পরিষেবা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে ভারতীয় কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি অনেক বাড়ানো হয়েছে। অপারেশন সিঁদুরে (Operation Sindoor) নয়টি জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়ে শতাধিক জঙ্গিকে খতম করার পর, ইসলামাবাদে ভারতীয় কূটনীতিকদের উপর চাপ বাড়াল পাকিস্তান। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় হাইকমিশন (Indian Embassy) এবং কূটনীতিকদের বাসভবনে সংবাদপত্র পৌঁছানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে দিল্লিতে অবস্থানরত পাকিস্তানি কূটনীতিকদের জন্যও সংবাদপত্র সরবরাহ বন্ধ করেছে ভারত।
কী ষড়যন্ত্র পাকিস্তানের?
এর পাশাপাশি, গ্যাস (Gass) ও জল (Water)-সহ মৌলিক পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় কূটনীতিকদের জন্য। পাকিস্তানি প্রশাসনের নির্দেশে স্থানীয় বিক্রেতারা ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মীদের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্থানীয় গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহকারীদের সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেন তাঁরা আর ভারতীয় কূটনীতিকদের কাছে রান্না ও গরমের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি বিক্রি না করেন।
এর আগেও ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর পাকিস্তান একই ধরনের হয়রানির পথে হাঁটেছিল। সে সময়ও ভারতীয় কূটনীতিকদের উপর নজরদারি, সরবরাহ বন্ধ-সহ নানাবিধ চাপ প্রয়োগের ঘটনা ঘটেছিল। ইসলামাবাদের এক সূত্রের কথায়, 'এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। ২০১৯ সালে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরও পাকিস্তান একই কৌশল নিয়েছিল'।
'অপারেশন সিঁদুর' কী?
সম্প্রতি ভারত পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই (ISI)-এর বড় একটি নেটওয়ার্ক ভেঙে দিয়েছে। এই অভিযানের সাংকেতিক নাম দেওয়া হয়েছিল 'অপারেশন সিঁদুর'। এই অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো (Central intelligence agencies) একসঙ্গে কাজ করেছে। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের অনেক গুপ্তচরকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অভিযান সফল হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান ভারতে তাদের গোয়েন্দা কার্যক্রমের একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া:
'অপারেশন সিঁদুর'-এর প্রতিশোধ নিতেই পাকিস্তান এখন ইসলামাবাদে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
১. মৌলিক সরবরাহ বন্ধ: ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মীদের আবাসনে গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং জলের মতো প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রায়ই ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এটি কূটনীতিকদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত করার একটি প্রচেষ্টা।
২. আগ্রাসী নজরদারি: ভারতীয় কূটনীতিকদের গতিবিধির ওপর পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনেক বেশি আগ্রাসী নজরদারি চালাচ্ছে। তাদের গাড়ি অনুসরণ করা, ছবি তোলা এবং অযথা হয়রানি করার মতো ঘটনা ঘটছে।
৩. হয়রানি ও ভয় দেখানো: বিভিন্ন অজুহাতে ভারতীয় কর্মীদের গাড়ি থামানো, জিজ্ঞাসাবাদ করা এবং তাদের পরিবারকে ভয় দেখানোর অভিযোগও উঠেছে। এর ফলে কূটনীতিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এই ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক নিয়ম-নীতির পরিপন্থী। ভারত এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং পাকিস্তানের এমন আচরণের কড়া নিন্দা করেছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পাকিস্তানকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)