জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: স্পেস স্টেশনে জিরো গ্রাভিটিতে অর্থাত্ মাধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকা সত্ত্বেও নিজেদের মধ্যে পার্টিতে মজেছিলেন শুভাংশু শুক্লারা। সেই মজার ভিডিয়ো দেখে আবেগে আপ্লুত হয়েছিল দেশবাসী। সারা পৃথিবার কাছেই এই ভিডিয়ো এক পজিটিভ বার্তা দিয়েছে। এবার মাইক্রো-গ্র্যাভিটিতে প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী শুভ্রাংশুর চুল কাটার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আমেরিকান মহাকাশচারী নিকোল আয়ার্স মহাকাশ যানে শুভ্রাংশু শুক্লার মাথার চুল কাটাছেন।
শুক্লার স্পেস সেলুন সেশনের ছবি, যা মহাকাশচারী নিকোল আয়ার্স শেয়ার করেছেন, তা দেখায় যে মাইক্রোগ্রাভিটি গ্রুমিং কতটা আনন্দদায়ক এবং দক্ষ হতে পারে।
See you soon Ax-4! Wishing you a soft landing! pic.twitter.com/qgsJQo2CRM
— Nichole “Vapor” Ayers (@Astro_Ayers) July 14, 2025
<blockquote class="twitter-tweet"><p lang="en" dir="ltr">See you soon Ax-4! Wishing you a soft landing! <a href="https://t.co/qgsJQo2CRM">pic.twitter.com/qgsJQo2CRM</a></p>— Nichole “Vapor” Ayers (@Astro_Ayers) <a href="https://twitter.com/Astro_Ayers/status/1944871160589771197?ref_src=twsrc%5Etfw">July 14, 2025</a></blockquote> <script async src="https://platform.twitter.com/widgets.js" charset="utf-8"></script>
মহাকাশচারী আয়ার্স:
মহাকাশচারী আয়ার্স মন্তব্য করেছেন, "আমরা আজ আমাদের Ax4 বন্ধুদের বিদায় জানিয়েছি। আমি গত সপ্তাহান্তের চুল কাটার কথা মনে করছিলাম। দীর্ঘ কোয়ারেন্টাইনের পর, আমার মনে হয় এটি তাদের জন্য ভাল ছিল। আমরা মজা করে বলেছিলাম যে, আমি যখন পৃথিবীতে ফিরে আসব তখন চুল কাটার ব্যবসায় আমার ভবিষ্যত কেমন হতে পারে, কিন্তু পর্যালোচনা এখনও প্রকাশিত হয়নি।"
আয়ার্স মার্কিন বিমান বাহিনীর একজন মেজর এবং মহাকাশে ১২২ দিন কাটিয়েছেন। তিনি প্রায় ছয় ঘন্টা স্পেসওয়াক পরিচালনা করেছেন।
পরীক্ষামূলক পাইলট কেনেডি স্পেস সেন্টার:
শুভাংশু শুক্লা, ভারতীয় মহাকাশচারী পরীক্ষামূলক পাইলট কেনেডি স্পেস সেন্টারে প্রায় ৩০ দিন কোয়ারেন্টাইনে কাটিয়েছিলেন। কারণ তাঁর মহাকাশযাত্রা বারবার পিছিয়ে গিয়েছিল। ২৯শে মে থেকে ২৫শে জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছিল।
মহাকাশে জল নেই:
ঘটনাক্রমে, শুক্লা মহাকাশে থাকাকালীন একবারও স্নান করেননি। ১৫০ বিলিয়ন ডলারের কক্ষপথ পরীক্ষাগারে কোনও গরম বা ঠান্ডা জল সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। স্পেশ স্টেশনে মহাকাশচারীদের ভেজা তোয়ালে ব্যবহার করে নিজেদের শুকিয়ে পরিষ্কার করতে হয়। তাঁর আগমনের পর, শুক্লাকে প্রথমবার দাড়িতে দেখা গিয়েছিল, কিন্তু পরে তাঁকে ক্লিন শেভে দেখা গিয়েছিল।
ইউরোপীয় মহাকাশচারী থমাস পেসকেট, যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এক বছরেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন, সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি-কে বলেছেন, মহাকাশে স্বাস্থ্যবিধি অভিযোজনের আরেকটি ক্ষেত্র।
থমাস পেসকেট বলেছেন, 'স্পষ্টতই, কোনও প্রবাহমান জল নেই। তাই, আমরা ওয়াইপ, ওয়েট ওয়াইপ এবং ড্রাই ওয়াইপ ব্যবহার করি। আমাদের ভেজা তোয়ালেও আছে। একটু সাবান লাগান, তোয়ালেতে কিছু জল দিন, তারপর আপনি নিজেকে ধুয়ে ফেলতে পারেন। স্নানের কোন আয়োজন নেই, বাথটাব নেই, স্পা নেই। খুব খারাপ অবস্থা।'
তবে পেসকেটের দাবি স্নানের ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও, মহাকাশচারীরা পরিষ্কার থাকেন। তাঁর কথায়, 'আপনি আসলে খুব পরিষ্কার। এটি আমার মনে একটি প্রশ্ন ছিল। মনে হয়েছিল আপনি ফিরে আসার সময় অবশ্যই বেশ নোংরা হবেন, কিন্তু আপনি তা হবেন না। প্রথমত, কারণ ধুলো এবং ঘাম অনেক কম এবং বাতাসে জিনিসপত্র থাকায় এটি অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত। তাই, মহাকাশের পরিবেশ খুবই পরিষ্কার। এবং দ্বিতীয়ত, কারণ আপনি ভেজা তোয়ালে দিয়ে নিজেকে বার বার মুছছেন, যা সত্যিই ভাল কাজ করে।'
বিরল চুল কাটার মুহূর্ত:
স্পেশ স্টেশন থেকে শুভ্রাংশু শুক্লা যে চিরস্মরণীয় স্মৃতিগুলি নিয়ে পৃথিবীতে ফিরবেন তার মধ্যে রয়েছে পৃথিবীকে ঘিরে ঘন্টায় ২৮,০০০ কিলোমিটার গতিতে ঘোরার সময় এই বিরল চুল কাটার কথা। মহাকাশচারীরা বিশেষভাবে ডিজাইন করা ভ্যাকুয়াম ক্লিপার ব্যবহার করেন যা চুল শুষে নেয়।
এই পৃথিবীর বাইরের কোনও মিশনের সবচেয়ে ডাউন-টু-আর্থ মুহূর্ত হতে পারে, ভারতীয় নভোচারী গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা মহাকাশে প্রথম ভারতীয় চুল কাটার মুহূর্ত। ভাসমান কাঁচি এবং উড়ন্ত শ্যাম্পু দিয়ে একটি মহাজাগতিক সেলুন কল্পনা করা একদম অমূলক
শুভাংশুদের প্রত্যাবর্তন-প্রক্রিয়া:
১৮ দিন মহাকাশে কাটিয়ে সময়মতোই শুরু হয়েছে শুভাংশুদের প্রত্যাবর্তন-প্রক্রিয়া। নাসা-র সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, সংক্ষেপে আইএসএস থেকে আনডকিং প্রক্রিয়া শুরু হয় ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলের। একে একে ধাপ পেরিয়ে মহাকাশযান ফিরবে পৃথিবীতে।
সময় লাগবে প্রায় ২২ ঘণ্টা। যেসব পরিস্থিতি মাথায় রেখে তাদের ফেরার দিনক্ষণ ঠিক হয়েছিল, আপাতত সব অনুকূল রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। সোমবার ভারতীয় সময় বিকেল চারটা ৪৫ মিনিট নাগাদ শুরু হয় আনডকিং প্রক্রিয়া। মঙ্গলবার বিকেল তিনটা নাগাদ ক্যালিফর্নিয়া উপকূলে অবতরণ করবে মহাকাশযান। সেখান থেকে বিশেষ জাহাজ মহাকাশযানটিকে নিয়ে আসবে স্থলভাগে। প্রতিবেদন লেখার সময় জানা গিয়েছে, ক্যাপসুল ‘ডিপার্ট বার্ন-১’ প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করে ফেলেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)