জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে এলেন শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla's Safe Landing)। কল্পনা চাওলা-কাণ্ডের পরে যে কোনও মহাকাশচারীরই মহাশূন্য় থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসার বিষয়ে একটা বিপদের আশঙ্কা থেকে যায়। তবে, সেই সব বিপদকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শুভাংশুরা স্বর্গ থেকে ফিরলেন মর্ত্যে! প্রশান্ত মহাসাগরের উপর এসে নামলেন তাঁরা। শুভাংশু শুক্লা নিরাপদে ফেরায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)।
ফ্লোরিডা থেকে
আমেরিকার ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উড়ান দিয়েছে শুভাংশুদের মহাকাশযান। যেখান থেকে নীল আর্মস্ট্রংদের অ্যাপোলো ১১ লঞ্চ করা হয়েছিল। সেই উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকেই একটি স্পেস এক্স ড্রাগন মহাকাশযানের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ফ্যালকন ৯ রকেট।
শুভাংশুর উঠে-আসা
১৯৮৫ সালের ১০ অক্টোবর, লখনউয়ের এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম শুভাংশুর। বাবা শম্ভুদয়াল শুক্লা সরকারি কর্মী, মা আশা গৃহবধূ। আলিগঞ্জের সিটি মন্টেসরি স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। প্রথম প্রচেষ্টাতেই পেরোতে পেরেছিলেন NDA-র প্রবেশিকা। ২০০৫ সালে স্নাতক, পরে বি. টেক। তারপর ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি এনডিএ-তে যোগ। ২০০৬ সালে ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ। এরপর শুরু ফাইটার পাইলটের জীবনের।
I join the nation in welcoming Group Captain Shubhanshu Shukla as he returns to Earth from his historic mission to Space. As India’s first astronaut to have visited International Space Station, he has inspired a billion dreams through his dedication, courage and pioneering…
— Narendra Modi narendramodi) July 15 2025
গুঞ্জন থেকে শুভাংশু
শুভাংশুর ডাকনাম গুঞ্জন। শুভাংশু শুক্লা তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানকারী হিসেবে তাঁর পরিবারের প্রথম মানুষ তিনি। শুভাংশু শুক্লা ২০২১ সালে গ্যাগারিন কসমোনট ট্রেনিং সেন্টারে তার প্রাথমিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার জন্য রাশিয়া যান। পরে বেঙ্গালুরুর মহাকাশচারী প্রশিক্ষণকেন্দ্রে প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান। ২০২৪ সালে তিনি IAF-এ গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান। গত আট মাস ধরে তিনি NASA এবং Axiom Space-এর কাছে নিবিড় প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। এই মহাকাশ অভিযানের আগে ১ মাস কোয়ারেন্টিনে ছিলেন ৷ Su-30 MKI, MiG-21, MiG-29, Jaguar, Hawk, Dornier এবং An-32 -এর মতো অনেক বিমান উড়িয়েছেন। ২০০০ ঘণ্টা উড়ানের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।
মহাকাশে শুভাংশুর গুঞ্জন
চনমনে, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, দীপ্তিতে মূর্ত খুশি-খুশি এক চেহারা। ভারতের গগনযাত্রী দলের গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের কাপোলা থেকে তিনি কিছু ছবি পাঠিয়েছিলেন কিছুদিন আগে। ১৪ দিনের এক মিশনে মহাকাশে গিয়েছিলেন শুভাংশু। ২৬ জুনে তাঁরা যাত্রা শুরু করেছিলেন। গন্তব্যে পৌঁছে তাঁরা এবার তাঁদের গবেষণাধর্মী কাজগুলি করছেন। কিন্তু কাজের পাশাপাশি তিনি কখনও কখনও তাঁর অনুভূতিও ব্যক্ত করেন। তিনি এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বলেছিলেন, উপর থেকে তিনি যে পৃথিবী দেখছেন, সেখানে কোনও সীমানা নেই, সীমান্ত নেই!
বিস্ময় প্রকাশ
ভারত নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শুভাংশু। তিনি বলেছেন, কক্ষপথ থেকে ভারতকে কী বিস্তীর্ণ দেখায়! মহাকাশ যে ঐক্যের বার্তা দেয়, তা-ও বলেছেন তিনি। এহেন শুভাংশ তাঁর লেটেস্ট কিছু ছবি শেয়ার করেছেন। তাতে দেখা গিয়েছে, শুক্লা আইএসএস তথা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের সাত-জানলাওয়ালা আইকনিক কপোলা মডিউলের একটি উফের ধারে বসে। সেখান থেকে নীল গ্রহ পৃথিবীর কী অপূর্ব সৌন্দর্য! এখান থেকে পৃথিবীর যে প্যানোরামিক ভিউ দেখা যাচ্ছে, তা দারুণ! একজন ভারতীয় হিসেবে শুভাংশু তাঁর গ্রহের রূপ দেখে আপ্লুত! শুভাংশুর এই অনুভূতি মনে করিয়ে দিচ্ছে আর এক ভারতীয় মহাকাশচারীর অনুভূতির কথা। তিনি মহাকাশ থেকে ভারতকে দেখে বলেছিলেন সারে জাঁহা সে আচ্ছা! সেটা ছিল ১৯৮৪ সাল!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)