জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আফগানিস্তানের টোলো নিউজ জানিয়েছে, তালিবান প্রশাসন আন্তর্জাতিক মঞ্চের কাছে আফগানিস্তানের ‘ইসলামিক এমিরেট’-কে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাঁরা দাবি করেছে যে যদি স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তাহলে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্বেগ এবং অভিযোগগুলি আরও ভালভাবে সমাধান করা হবে।
আফগান তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘ইসলামী এমিরেট তার দায়িত্বের প্রতি আরও মনোযোগ দেবে এবং আমাদের নিজেদের মধ্যে বা অন্য দেশ থেকে আসা অভিযোগগুলো ভালোভাবে সমাধান করা হবে’। মুজাহিদের মতে, ‘বিশ্বের কিছু শক্তিশালী দেশ যদি আফগানিস্তানের স্বীকৃতিতে বাধা দেয়, বিশ্বের বাকি দেশগুলি তাদের অনুসরণ করা উচিত নয়’।
তালিবান নেতৃত্বাধীন অর্থ মন্ত্রক বলে যে গত অগস্ট থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ‘ইসলামিক এমিরেট’-এর স্বীকৃতির অভাব দেশটিতে চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে। তত্ত্বাবধায়ক তালিবান শাসনের অধীনে আফগানিস্তানের অর্থনীতি বিষয়ক উপমন্ত্রী আবদুল লতিফ নাজারি বলেছেন, ‘ইসলামিক এমিরেটকে স্বীকৃতি দিলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পৃক্ততা বাড়বে এবং এটি এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতার কারণ হবে’।
বিশ্লেষকদের মতে, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা, অন্য দেশের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়া এবং মানবাধিকার, বিশেষ করে নারী ও মেয়েদের অধিকার নিশ্চিত করা, ইসলামী এমিরেটের স্বীকৃতির জন্য ভিত্তি প্রশস্ত করবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, ‘স্বীকৃতি পেতে তালিবানদের প্রথমে জনগণের কথা বলা উচিত। তাদের আইন, রাজনীতি এবং শাসন ব্যবস্থা পালন করা উচিত। তাদের জনগণের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত’।
আরও পড়ুন: Turkey Earthquake: জনজীবন স্বাভাবিক হওয়ার আগেই ফের কেঁপে উঠল তুস্কের হাতায়, মৃত কমপক্ষে ৩
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও জানাচ্ছেন, ‘তাদের (ইসলামী এমিরেট) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো এবং কূটনৈতিক উপায়ে তাদের সমস্যা সমাধান করা উচিত’। আফগানিস্তান ক্রমাগত একটি মানবিক সঙ্কটের মুখোমুখি হচ্ছে এবং সবচেয়ে খারাপ রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। এরই মাঝে আফগানিস্তানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিশেষ দূত টমাস নিকলাসন সম্প্রতি বলেছেন যে তারা আফগানিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার পক্ষে নয় তবে তালিবান শাসনকে স্বীকৃতি দেওয়াও সম্ভব নয়।
তালিবানরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষা নিষিদ্ধ করেছে। মেয়েদের জন্য সকালের ক্লস এবং ছেলেদের জন্য বিকেলের ক্লাস আলাদা করা হয়েছে। সম্প্রতি, তারা মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষাও নিষিদ্ধ করেছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে তবে স্কুলগুলি এখনও খোলা হয়নি। নিকলাসন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসন গঠন এবং আফগান জনগণের অধিকার রক্ষার গুরুত্বের ওপরও জোর দিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ও মেয়েদের অধিকার, পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রয়েছে।