জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তালিবান শাসন মানেই আতঙ্কের। সেই আতঙ্কের আবহেই বাধ্য হয়ে সেখানে বাস করছেন আফগানিস্তানবাসী। তালিবানের সঙ্গে তাদের নানা সংঘাত, নানা মতভেদ। কিন্তু কাজ হয়নি। সদা-উঁচিয়ে থাকা বন্দুকের নলের কাছে হার মেনেছে স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তির সংকল্প। বারবার খর্ব হয় স্বাধীনতা। আর তালিবান শাসনে মেয়েদের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার ঘটনা নতুন নয়! বাড়ি থেকে বাইরে বেরনোও সেখানে কঠিন। সঙ্গে আত্মীয়সম্বন্ধের কোনও পুরুষ থাকতে হবে। মেয়েদের পড়াশোনার উপরও সেখানে নানা বিধিনিষেধ। পড়াশোনার জন্য বাইরে যাওয়ার অনুমতি মেলাও এবার সেখানে কঠিন হয়ে পড়ল। সম্প্রতি উচ্চশিক্ষার জন্য ছাত্রীদের কাবুল ছাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল আফগানিস্তানের তালিবান শাসক। কয়েকদিন আগে কাবুলের কয়েকজন পড়ুয়া কাজাখস্তান এবং কাতারে পড়তে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে তালিবান সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। পড়ুয়াদের মধ্যে ছাত্রেরা অনুমতি পেলেও ছাত্রীদের কাউকেই কাবুল ছাড়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: Afghanistan Floods: অতি ভারী বৃষ্টির জেরে বন্যা, ১৮০ জনের মৃত্যু, ভেঙে পড়েছে তিন হাজারের বেশি বাড়ি
এই ঘটনায় তালিবানের লিঙ্গবৈষম্যের প্রমাণ মিলল-- এই বলে সে দেশের মহিলারা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মহল অভিযোগ করছে। গত বছর অগস্টে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পরে সে দেশের মহিলাদের উপর নানা বিধিনিষেধ জারি করেছিল তালিবান। দেশে অবশ্য ছাত্রীদের আলাদা ভাবে স্কুলে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চালু হয়েছে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পর্দা টেনে দেওয়ার ব্যবস্থা। আবার অধিকাংশ চাকরির জায়গা থেকেই ছাঁটাই করা হয়েছে মহিলাদের। নব্বইয়ের দশকে তালিবান শাসনে আফগান মহিলাদের একা বাড়ির বাইরে বেরোনোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা ছিল। শিক্ষা এবং চাকরিক্ষেত্রে ব্রাত্য ছিলেন তাঁরা।
গত বছর ক্ষমতা দখলের পর আগের চেয়ে একটু অন্য পথে হাঁটার বার্তাই দিয়েছিল তালিবান। সংগঠনের মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ জানিয়েছিলেন, মেয়েদের জন্য স্কুলের দরজা খুব তাড়াতাড়ি খোলার ভাবনাচিন্তা করছেন তাঁরা। যদিও ক্ষমতায় শিকড় মজবুত হতেই ধীরে ধীরে নারীবিদ্বেষী ভূমিকা ফিরে আসছে এই সংগঠন। ১৫ অগস্ট তালিবান শাসনের এক বছর পূর্তির দিনে কাবুলে শিক্ষা ও কাজের দাবিতে মহিলাদের মিছিলে চলেছে গুলিও।
এর উপর এখন আফগানিস্তান বিধ্বস্ত হয়ে আছে বৃষ্টি ও বন্যায়। তালিবান এই বিপর্যয় মোকাবিলায় অন্য দেশেরও সাহায্য চেয়েছে। আর তারই মধ্যে আবার এই নতুন ফতোয়া এবং তা নিয়ে বিতর্ক।