জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আগেই নাক গলিয়েছিল। অবশেষে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে (Iran-Israel War) সরাসরি অংশ নিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার গভীর রাতে, রাত ২টো নাগাদ, মার্কিন হানায় কেঁপে উঠল ইরান। ফোরদোতে আমেরিকা ৬টি বাঙ্কার বাস্টার বোমা (GBU-57 bunker-buster bombs) ফেলেছে। ইরানের নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানে আঘাত করেছে ৩০টি টমাহক মিসাইল দিয়ে। ৩০টি মিসাইলই ছোড়া হয়েছে সাবমেরিন থেকে। ভয়ংকর অস্ত্র এই বাঙ্কার বাস্টার।
চূড়ান্ত গোপনীয়তায়
চূড়ান্ত গোপনীয়তার সঙ্গেই পুরো পরিকল্পনাটা করেছে আমেরিকা। এর পরই তারা একে একে ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানের নিউক্লিয়ার সাইটে হামলা চালায়। এই হামলা চালায় মার্কিন বায়ু সেনা। এই আক্রমণেই বড় ভূমিকা নেয় ৬টি বি-২ স্পিরিট স্টিল্থ বম্বার (B-2 Spirit Stealth Bomber)। বিধ্বংসী এই যুদ্ধবিমান গুলি থেকেই ফেলা হয় ৬টি জিবিইউ-৫৭ (GBU-57 Massive Ordnance Penetrator) তথা বাঙ্কার বাস্টার (bunker buster) বোমা।
১৩৬০০ কিলো ওজন, মাটির ২০০ ফুট গভীরে
'বাঙ্কার বাস্টার' মাটির গভীরে গিয়ে বিস্ফোরণ করতে সক্ষম। আমেরিকার ক্ষেত্রে 'বাঙ্কার বাস্টারে'র পোসাকি পরিচয় হল-- জিবিইউ-৫৭ এ/বি এমওপি। মার্কিন বিমান বাহিনীর মতে প্রায় ১৩,৬০০ কিলো ওজনের এই বোমা ভূপৃষ্ঠের গভীরে থাকা বাঙ্কার এবং টানেলগুলিতে আক্রমণ করার জন্য তৈরি। বাঙ্কার-বিধ্বংসী এই মার্কিনি বোমা ফাটার আগে ভূপৃষ্ঠের প্রায় ২০০ ফুট (৬১ মিটার) গভীরে প্রবেশ করতে পারে। বোমাগুলি পরপর নিক্ষেপ করা যেতে পারে। প্রতিটি বিস্ফোরণের সঙ্গেই তা ক্রমশ মাটির আরও গভীরে প্রবেশ করতে পারে। ইরানের ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রটি ভূগর্ভের ৮০ থেকে ৩০০ ফুট গভীরে অবস্থিত বলে মনে করা হয়। কোনও সাধারণ বোমা বা যুদ্ধাস্ত্র তাকে স্পর্শও করতে পারে না বলেই মিথ। আর সেই মিথ খুব অবলীলায় ভেঙে ফেলল আমেরিকা। একটি B-2 স্টিলথ বম্বার বানাতে খরচ ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, ১৮,০০০ কোটি টাকারও বেশি। B-2 উড়লে প্রতি ঘণ্টায় খরচ হয় ১,৫০,০০০ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার বেশি।
দোসর 'তোমাহক'
বাঙ্কার বাস্টারের সঙ্গে শনির রাতে মাঠে নেমেছিল মার্কিন নৌবাহিনীর পারমাণবিক সাবমেরিনও। তা থেকেই ছোড়া হয় ৩০টি BGM-109 Tomahawk ক্রুজ মিসাইল। অভিযানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ফোরদো নিউক্লিয়ার সাইট। যা একটি পাহাড়ের নীচে, প্রায় ৯০ মিটার গভীরে।
বিশ্বের অন্যতম সুরক্ষিত পরমাণু কেন্দ্র?
ফোরদা নিউক্লিয়ার সাইট বিশ্বের অন্যতম সুরক্ষিত পরমাণু কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এটির গঠন এমনভাবে পরিকল্পিত যে, এটি সরাসরি বোমার আঘাত সহ্য করতে সক্ষম। কিন্তু সেই মিথ কি ভাঙল? কেননা, B-2 বম্বারগুলি এই টার্গেটের উপরই এবার নিখুঁত নিশানায় ফেলেছে ১২টি GBU-57 বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা। যদিও, ইরানের দাবি, তাদের কোনও ক্ষতি হয়নি। তাদের দাবি, ফোরদো-র মাত্র ২টি টানেলে হামলা হয়েছে। অ্যাটাক হয়েছে শুধুমাত্র এন্ট্রি ও এক্সিট টানলেই। ওদিকে, আমেরিকার দাবি, সবই তছনছ হয়ে গিয়েছে। যদিও আমেরিকা এ-ও বলেছে, ইরানের পরমাণুকেন্দ্র থেকে কিন্তু কোনও তেজস্ক্রিয় বিকিরণ দেখা যায়নি!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)