জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইসরায়েল-ইরানের সংঘাতের আবহেই পর পর দুটো ভংয়কর ঘোষণা করেছেন খোমেইনি। এক, সব ক্ষমতা নিজের হাত থেকে ছেড়ে ইরানের দায়িত্ব দিলেন সেনার কাঁধে। দুই, ট্রাম্পের হুমকিতেও খামেইনি বলে দিলেন, কোনওমতেই আত্মসমর্পণ নয়। কিন্তু এত যার ক্ষমতা, এত যার গুরুত্ব সেই আয়াতোল্লাহ আলি খোমেইনি (Ayatollah Ali Khamenei) কে? কেনই বা ইরানের রাজনীতিতে তিনি বড় নাম? কেন তাঁকে নিয়ে এত মাথাব্যথা পশ্চিমী দুনিয়ার?
ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লাহ আলি খোমেনেই! ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া দেশ ইরানের সুপ্রিম লিডার হলেন ‘আয়তোল্লাহ’। আয়াতোল্লাহ কোনও নাম নয়। এটি একটি পদ। সাড়ে তিন দশক ধরে এই ‘আয়তোল্লা’ পদে রয়েছেন আলি খোমেইনি। আমেরিকা ও ইসরাইলের বিরুদ্ধ অবস্থান নিয়েছেন, ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক প্রজেক্ট এগিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও আন্দোলনও দমন করেছেন।
খোমেইনি ইরানের সরকার, বিচার বিভাগ, সামরিক বাহিনী, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী এবং কুদস ফোর্স–এর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখেন। প্রয়োজনে পাতাল ফুঁড়ে নিকেশ করা হবে তাঁকে। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, এমনকী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই ৮৬ বছরের শীর্ষনেতাকে বাঁচাতে তাঁকে গোপন আস্তানায় রাখা হয়েছে।
খোমেইনির নেতৃত্বে ইরান লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হাতিস এবং ইরাক ও সিরিয়ায় শিয়া মিলিশিয়াদের মতো সশস্ত্র দলগুলি তাঁর প্রভাবকে প্রসারিত করে। এই আঞ্চলিক নেটওয়ার্কটিকে প্রায়শই "প্রতিরোধের অক্ষ" হিসাবে উল্লেখ করা হত। বিগত ৩৫ বছর ধরে পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধি থেকে আধুনিক সমরাস্ত্র ভাণ্ডার তৈরির কাজ সেরেছেন নিঃশব্দে।
খোমেইনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৯ সালে ইরানের মাশহাদে। তিনি ছিলেন আয়াতোল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেইনি’র শিষ্য, যিনি ১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লবের মাধ্যমে দেশটির প্রো-ওয়েস্ট রাজতন্ত্রকে উচ্ছেদ করে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আসলে ইরানে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী থাকলেও গোটা দেশটি পরিচালনা করে সুরা কাউন্সিল। তার সদস্য ১২ থেকে ২৫ জন মৌলবী। আর তাদের মাথায় থাকেন ‘আয়তোল্লা’। যার ছাড়পত্র পেলে তবেই দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী কিংবা সেনাপ্রধান পদে মনোনয়ন মেলে। তারপর হয় নির্বাচন।
এদিকে উত্তরসূরি হিসাবে খোমেইনির দ্বিতীয় পুত্র মোজতবা খামেনেই ইরানের ধর্মীয় শীর্ষনেতা হিসাবে দায়িত্ব নিতে পারেন। মোজতবার জন্ম ১৯৬৯ সালে। ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এবং ইরানের ধর্মীয় গোষ্ঠী উভয়ের সঙ্গেই গভীর সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। মোজতবা ইরান-ইরাক যুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বলা হয়, খোমেইনির পরে ইরানের দায়িত্ব নিতে পারেন গোলাম হোসেন মোহসেনি এজেই। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ অতীতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)