ওয়েব ডেস্ক: রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাপ্তির শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে তিন বছর আগেই। নোবেল চুরিরও বারো বছর পেরিয়েছে। এই সময়কালে তদন্তকারী সংস্থা বদলেছে বারবার। কেন্দ্র ও রাজ্যে জমানাও বদল হয়েছে। কিন্তু, হারানো নোবেলের হদিশমাত্র মেলেনি। এখন অবশ্য আশার আলো দেখছেন তদন্তকারীরা।
গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য উনিশশো তেরো সালে নোবেল পান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই সহস্রাব্দের গোড়া পর্যন্ত নোবেল পদক ছিল বিশ্বভারতীতেই। স্থায়ী ঠিকানা উত্তরায়ণের রবীন্দ্র জাদুঘর। দুহাজার চারের বসন্তে নোবেল হারায় বাংলা।
২০০৪ সালের ২৫ মার্চ উত্তরায়ণের রবীন্দ্র জাদুঘর থেকে নোবেল পদক চুরির বিষয়টি নজরে আসে। নোবেল ছাড়াও জাদুঘর থেকে চুরি যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত ৫৩ টি পদক। তারপর তদন্ত আর ব্যর্থতার লম্বা ইতিহাস।
প্রাথমিকভাবে নোবেল চুরির তদন্তে নামে সিআইডি। তারপর ঘটনার গভীরতা বুঝে তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইকে। কয়েক বছর তদন্ত চালিয়েও নোবেল চুরি রহস্যের সমাধান করতে ব্যর্থ হয় সিবিআই,
আদালতে ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়ে তদন্ত বন্ধ করে দেয় সিবিআই।
দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর গত অগাস্টে প্রথমবার বিশ্বভারতী পরিদর্শন যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই প্রত্যয়ের সঙ্গে নোবেল চুরির তদন্ত ফের শুরু করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই তড়িঘড়ি রাজ্য সরকার নোবেল চুরির তদন্ত শুরু করে। কেন্দ্রকে জানিয়ে সিবিআইয়ের কাছ থেকে তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তারপর IG পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করা হয়।
সিট সূত্রে খবর, নোবেল চুরি তদন্ত শুরুর আগে এই সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি ক্লু হাতে এসেছিল তাদের। সাধারণ একটি চুরির মামলায় ধৃত ব্যক্তির থেকে প্রথম শান্তিনিকেতনে নোবেল চুরির সূত্র পায় সিআইডি। ধৃতকে জেরা করে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকে আরও দুই অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দুই অপরাধীকে গ্রেফতার করে বরানগরের এক চোরাই মালের ক্রেতার হদিশ মেলে। মধ্য কলকাতার একটি বনেদি বাড়িতে বড়সড় চুরির ঘটনাতেও ওই চোরাই ব্যবসায়ীর যোগসূত্র মিলেছিল।
সব সূত্রগুলি এক সুতোয় বাঁধতেই নতুন এক হদিশ পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। আপাতত সেই পথেই এগোচ্ছে তদন্ত। গোয়েন্দারা আশাবাদী।